জেএসসি-জেডিসিতে অটো প্রমোশনমহ ৬ বিকল্প প্রস্তাব

  • আপডেট টাইম : আগস্ট ০৮ ২০২০, ২১:১১
  • 677 বার পঠিত
জেএসসি-জেডিসিতে অটো প্রমোশনমহ ৬ বিকল্প প্রস্তাব
সংবাদটি শেয়ার করুন....

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে পাবলিক পরীক্ষাগুলো। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট অষ্টম শ্রেণি শেষে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নিয়ে ছয়টি বিকল্পপ্রস্তাব দিয়েছে।প্রস্তাবে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংকোচন এবং বিষয় কমিয়ে আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরীক্ষা ছাড়াই নবম শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে ইউনিসেফের একপ্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বেডু) উল্লেখ করেছে, বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতির কারণে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ ৮৪টি দেশ পাবলিক বা এ ধরনের পরীক্ষা হয় বাতিল নয়তো স্থগিত করেছে।
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাসংক্রান্তপ্রস্তাব ঈদের আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বেডু। জেএসসি ও জেডিসিতে এবার মোট পরীক্ষার্থীপ্রায় ২৬ লাখ।
বেডুর দেওয়াপ্রস্তাব পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, সব দিক দেখেই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশের বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে বেডু। তারা মূলত জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে।
জেএসসি–জেডিসির মতোই পঞ্চম শ্রেণি শেষেপ্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষা কবে হবে, সেটিও অনিশ্চিত।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যদি সেপ্টেম্বরেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে, তাহলে পাঠ্যসূচি কমিয়ে সেপ্টেম্বরে এ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীতে এবারপ্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে।
বেডুর ফোকাল পয়েন্ট ও ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী বলেন,প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার বিষয়টি তাঁদের কাজের এখতিয়ারে নেই। তবে জেএসসি নিয়ে দেওয়া তাদের বিকল্পপ্রস্তাব সরকার বিবেচনা করে দেখতে পারে।
শিক্ষাপ্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন হয়তো পরীক্ষা ছাড়াই হতে পারে। কিন্তু পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পরীক্ষা ছাড়া কঠিন। আবারপ্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং জেএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। ফলে সহজ কোনো সমাধান নেই।
করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় ছুটি বাড়িয়ে এখন তা ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। ছুটির কারণে এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া যায়নি। গত এপ্রিলে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে এই পরীক্ষা শুরু হবে। এইচএসসিতে এবার পরীক্ষার্থীপ্রায় ১৩ লাখ।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, বাস্তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া কঠিন হবে।
জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে যা আছেপ্রস্তাবে
আগামী সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যদি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু রাখা যায় তার ভিত্তিতে জেএসসি-জেডিসি নিয়ে বেডুপ্রথমপ্রস্তাবটি করেছ। ওই তিন মাস শ্রেণি কার্যক্রম চললেও নির্ধারিত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সমাপ্ত করা সম্ভব নয়। এ জন্য শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংকোচন করে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তারা বলছে, সংকুচিত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে আগের মতোই ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব।
দ্বিতীয়প্রস্তাবটি করা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্তও করোনা সংক্রমণের বাস্তবতা ধরে নিয়ে। এ ক্ষেত্রে পাঠ্যসূচি সংকোচন করে ডিসেম্বরে শুধু বহু নির্বাচনীপ্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এইপ্রক্রিয়ায় এক ঘণ্টার পরীক্ষায়প্রতিটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে।

তৃতীয়প্রস্তাবে পরীক্ষার মোট বিষয়ের সংখ্যা কমানোর কথা বলা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তারা বলছে, জেএসসি পরীক্ষা চালুর আগে অষ্টম শ্রেণিতে যে বৃত্তি পরীক্ষা হতো তাতে কেবল বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা হতো।
চতুর্থপ্রস্তাবে সব কটি বোর্ডে অভিন্নপ্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতেপ্রশ্নপত্র ছাপার ক্ষেত্রে যে দীর্ঘ সময় লাগে, সেটা কমবে। এ ছাড়া সব বোর্ডের ফলাফলেও সাম্যতা আসবে।
পঞ্চমপ্রস্তাবে সংকুচিত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচির আলোকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদি নভেম্বর থেকে এক মাসের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে এটি করা যাবে। বিদ্যালয়কেন্দ্রিক এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে শুধু অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার ফল শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পাঠাতে হবে। এখানেও আসন বিন্যাসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিন্ন সেটেপ্রতিদিন দুই পালায় পরীক্ষায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষার জন্য মনোনয়ন দেওয়া যেতে পারে।
সর্বশেষপ্রস্তাবে বলা হয়েছে, চলতি বছর বিদ্যালয়ে যদি শ্রেণি কার্যক্রম আদৌ চালু করা সম্ভব না হয় তাহলে কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে। এ জন্য একটি শিক্ষাবর্ষকে বাতিল না করে শিক্ষাক্রমের অবশিষ্ট অংশকে পরবর্তী শ্রেণিতে সমন্বয় করা যেতে পারে।
অষ্টম শ্রেণিতে পড়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, পরীক্ষার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কারণ, এটি নিয়ে শিক্ষার্থী–অভিভাবক সবাই চিন্তায় আছেন।
সার্বিক বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে বেডু যেসব বিকল্পপ্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেইপ্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। আর এই পরীক্ষার সনদ কাজেও আসে না। স্কুলের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা যেতে পারে।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

ফেসবুক কর্নার

শিরোনাম
আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে মুস্তাফিজকে!ইডেনের গ্যালারিতে বসেই ধূমপান, প্রবল সমালোচনআরো ১১৮ বুদ্ধিজীবীর তালিকা দিল মুক্তিযুদ্ধ মঢাকার বস্তির বেশিরভাগ মানুষ বরিশালেরভারতে উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশ সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতলো বাংলাদেশপুরো রমজান মাস বন্ধ থাকবে প্রাথমিক-মাধ্যমিক প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলি শুরু চলতি মাভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিল মেয়েরাপাকিস্তানে ইমরান খানের জেলে হামলা, আটক ৩জাতির পিতা সংবিধানে নারীদের অধিকার নিশ্চিত কপিরোজপুরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ নিহত মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার ফাইনালে বাংলাদেশইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, আজকে সেটাই প্রমাণিত:
%d