বরিশাল ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
মিজানুর রহমান জুয়েল, মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধিঃঃ একজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার দেড়লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের জ্বর, কাশি ও ছোট ছোট কাঁটাছেড়ার চিকিৎসা ছাড়া কিছুই মেলেনা। রোগীদেরবে শিরভাগ প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে হয় বাহির থেকে। আর অন্য রোগের সেবা নিতে যেতে হয় মেঘনা পাড়ি দিয়ে জেলা শহর ভোলায়।
ভোলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য ৩১ শয্যার হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করে উদ্বোধন করা হয় ৬ বছর পূর্বে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ে ৫০ শয্যার লোকবল অনুমোদন দেওয়ার জন্য
একাধিক চিঠি চালাচালি করেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালে ৩১ শয্যার লোকবলও নেই। একজন চিকিৎসক ও ৬ জন নার্স দিন-রাত দেড় লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে।
যেখানে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ৯ টি। কিন্তু কাজ করছেন একজন চিকিৎসক। নার্স (সেবিকা) ১৬ জনের মধ্যে রয়েছে ৬ জন। চতুর্থ শ্রেণীর
কর্মচারীসহ ৮৪ জনের মধ্যে ৪২ টি পদ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে খালি। হাসপাতালে সাধারন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দূরের কথা এক্সরে পর্যন্ত নেই। নেই কোন
টেকনেশিয়ান ও ফার্মাসিষ্ট নেই ও সংকট’ থেকে যেন বের হতে পারছেনা মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
অথচ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলার দেড় লক্ষ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল।
এদিকে রাত ১ টার পর থেকে পরদিন বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না হাসপাতালে। এতে রাতের অন্ধকার ও গরমে অনেকে ভয়ে চিকিৎসা না নিয়ে
বাড়ি ফিরে যায়। আর যারা হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেয় গরমে তাদের অবস্থা আরো অবনতি হয় বলে জানিয়েছেন ভর্তিকৃত একাধিক রোগীরা।
বাইরে থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সুন্দর ভবন দেখে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, ‘হাসপাতালে উপরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট’। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বাচ্চু জানান,‘হাসপাতালে সেবা পাওয়া যায় না। বিদ্যুৎ থাকে না। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ঔষধও পাওয়া যায় না’।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুবাচ্চাদের অভিভাবকরা জানান, ‘দিনে-রাতে ডাক্তার একবার আসে। নার্সদের খোঁজ করে পাওয়া যায়না। ঔষধবাহির থেকে কিনতে হয়। নাই কোন কারেন্ট, নাই কোন ফ্যান, বাচ্চারা
অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে’।
মনপুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি জানান, মনপুরা হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা অত্যান্ত করুন, এখানকার রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার জন্য রোগীদের বিড়ম্বনা পৌহাতে হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডাঃ রেজয়ানুল আলম জানান, ডাক্তার, নার্স ও জনবল সংকট রয়েছে। এছাড়াও রাতের বেলায় বিদ্যুৎ সমস্যা রয়েছে। তবে এইসব সমাধান করা গেলে আমরা এই দ্বীপের মানুষদের কাঙ্খিত সেবা দিতে
পারবো। তার পরেও রোগীদের সেবা দিতে আপ্রাণ চেষ্ঠা করে যাচ্ছি।