বরিশাল ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গতকাল সোমবার বেলা ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ ছিলেন এবং বাকি ছয়জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক আজ মঙ্গলবার ৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আরটিপিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এ নিয়ে এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে গত এক বছরে ৫৩৬ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে ১৫৭ জন করোনা পজিটিভ এবং ৩৭৯ জন লক্ষণ নিয়ে মারা যান।
এদিকে এই হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। নির্ধারিত শয্যার চেয়ে বর্তমানে বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। করোনা চিকিৎসার জন্য শয্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৭ মার্চ শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড চালু হয়। ইউনিট চালুর পর এই প্রথম শয্যাসংখ্যার বেশি ১৬১ জন রোগী ভর্তি আছেন। ফলে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। করোনা ওয়ার্ডের ১২ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সব কটি শয্যা রোগীতে পূর্ণ ছিল। আরও অন্তত ২৫ জন রোগীর আইসিইউ সেবা প্রয়োজন হলেও শয্যা খালি না থাকায় সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালের ১৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ডে নতুন ২৮ রোগীসহ ১৬১ রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৯ জন করোনা পজিটিভ। গত বছরের মার্চ থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৩ হাজার ৭০১ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ১০৩ জন।
১ হাজার শয্যার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পুরোনো ৩৬০ শয্যার জনবলকাঠামো অনুযায়ী চিকিৎসকের পদ ২৪৪ জন। সেখানে বর্তমানে আছেন ১০৬ জন। বাকি পদগুলো শূন্য থাকায় সাধারণ রোগী এবং করোনার নতুন একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল পরিচালনা অনেকটাই দুরূহ হয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, সংকট কাটাতে মেডিকেল কলেজ থেকে ২০ চিকিৎসককে আপাতত চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে হাসপাতালে পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া জনবলের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় আমরা করোনা ওয়ার্ডকে ১৫০ থেকে ২০০ শয্যায় উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে শয্যা বসানো হয়েছে। এ জন্য বাড়তি যে সরঞ্জাম লাগবে, তা আনার জন্য মঙ্গলবারই আমাদের লোক ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’