বরিশাল ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ঘর থেকে মোবাইল হারানোর অপবাদ দিয়ে তানিশা (৭) নামের এক কন্যা শিশুকে গাছে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন দাদি মনোয়ারা বেগম। নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। গত দুই দিন ধরে ভিডিওটি ফেসবুক ভাইরাল হলে রবিবার পুলিশ অভিযুক্ত দাদি মনোয়ারা বেগমকে আটক করে।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দেউলা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের চরটিটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শিশু কন্যা তানিশার মা সোনিয়া বেগমের দায়ের করা মামলায় রবিবার (২৬ জুন) দাদি মনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকতা বোরহানউদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনজুর হাসান জানান, পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে শিশু তানিশার বাবা হারুনের সঙ্গে তার মা সোনিয়ার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তানিশা তার মা সোনিয়ার কাছেই থাকত। কয়েক মাস আগে বাবা হারুন মেয়ে তানিশাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং দাদি মনোয়ারা বেগমের কাছে রেখে চট্টগ্রাম চলে যান। এর পর থেকেই দাদি মনোয়ারা বিভিন্ন সময় তানিশাকে মারধর করতেন।
গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দাদি মনোয়ারা বেগম তানিশাকে ঘরে রেখে পাশের বাসায় যান। এসময় তানিশাও অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে ঘর থেকে বাইরে যায়। পরে মোবাইল হারানোর অপবাদ দিয়ে শিশু তানিশাকে মাথার চুল ধরে মাটিতে কয়েবার আছাড় দেন দাদি এবং চুল ধরেই টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। দিনভর বেঁধে রেখে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করেন। এ দৃশ্যটি স্থানীয় একজন মোবাইলে ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।
একপর্যায়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শিশুটির মা সোনিয়া বেগম এসে তাকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বোরহানউদ্দিন থানার পরিদর্শক তদন্ত আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মনোয়ারা বেগম অনেক দিন ধরে শিশু তানিশাকে নির্যাতন করে আসছে। প্রথম প্রথম স্থানীয়রা মনে করতেন তানিশা ছোট হিসেবে তাকে দাদি শাসন করছেন। কিন্তু এবারের বিষয়টি ছিল অমানবিক। এ ঘটনায় তানিশার মায়ের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত মনোয়ারা বেগমকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।