বরিশাল ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ গ্রাহকদের কোন রকম নোটিস করা ছাড়াই বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের অযুহাতে প্রায় ৫শতাধিক গ্রাহকের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করল ঝালকাঠি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। গত সাতদিন ধরে ঝালকাঠির রাজাপুরে চলমান এ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারনে উপজেলার আবাসিক গ্রাহকরা যেমন অন্ধকারে রাত কাটাচ্ছেন তেমনি বিদ্যৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারনে ব্যাবসায়ীদের ব্যাবসায় বিঘ্ন ঘটছে।
জানা গেছে,ঝালকাঠির রাজাপুর পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল কার্যালয় হঠাৎ করে সপ্তাহ খানেক আগে থেকে কোন গ্রাহককে কোন কিছু না জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করেছে। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার ছোট ছোট ব্যাবসায়ী ও গ্রামের সাধারণ পরিবারগুলো।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, করোনার পর থেকে এমনিতেই মানুষের আয় কমে গেছে। তারপরে কষ্ট করে হলেও পরিবার চালিয়ে নিচ্ছি আমরা। আমাদের যাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের কাছে পল্লী বিদ্যুতের পাওনা আছে দুশ থেকে তিনশ টাকা।তারা আমাদের কাছে বিল পাবে সত্য কিন্তু এই কয়টি টাকার জন্য কাউকে কিছু না জানিয়ে চোরের মতো বাড়িতে ঢুকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে এটা মানা যায়না। আমরা জানিই না আমাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। রাজাপুর পল্লী বিদ্যুৎ খামখয়ালী করছে। একটা নতুন সংযোগ নিতে গেলে আমাদের কমপক্ষে এক মাস ঘুরতে হচ্ছে। সুপারভাইজার
এনায়েত দিনের পর দিন আমাদেরকে বিভিন্ন অযুহাতে ঘোরায়, সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেয়না। এজিএম মধু বাবুও বিভিন্ন ধরনের ব্যস্ততার কথা শুনায় আমাদের। এক কথায় রাজাপুর পল্লী বিদ্যুতের কাছে জিম্মি আমরা।
গালূয়া ইউনিয়নের জীবনদাশকাঠী এলাকার সঞ্জিব চন্দ্র দাস বলেন,আমার কাছে পল্লী বিদ্যুতের একশত পচ্চান্ন টাকা পাওনা আছে।এজন্য আমার বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন আমার বাড়িতে গিয়ে কখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে আমার পরিবারতো জানেই না বাড়ির অন্য কেউও বলতে পারছেনা কখন সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।লাইন কাটার সময় আমাদেরকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষনিক আমি বিলটি পরিশোধ করতে পারতাম।
রাজাপুর সদর ইউনিয়ন পূর্ব রাজাপুর গ্রামের ইদ্রিস ,এছাহাক,আ.কাদের ও সৈয়দ খান বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। সকাল হলেই আমরা কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি।শনিবার কাজ থেকে সন্ধায় বাড়ি ফিরে দেখি ঘরে বিদ্যুৎ নেই। পরিবারের কাছে জানতে চাইলে তারাও এ বিষয়ে বলতে পারেনি।পরে বাজারে গিয়ে জানতে পেরেছি পল্লী বিদ্যুতের লোকজন এসেছিল। তারাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
রাজাপুর বাইপাস এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক জিয়াঊল হক লিনু বলেন, আমাদের ভাড়াটিয়াসহ বানিজ্যিক ও আবাসিক মিলিয়ে প্রায় ত্রিশটি মিটারে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। একজন ভাড়াটিয়ার দায়িত্বে প্রত্যেক মাসে এই মিটারগুলোর বিল পরিশোধ করা হয়। হঠাৎ করে গত পরশুদিন দেখি বাড়ির একটা মিটারে সংযোগ নেই। পরে একজন বিদ্যুতের মিস্ত্রি ডেকে এনে লাইন চেক করতে গিয়ে দেখি মিটারের সিল কেটে গোড়া থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সামনের মার্কেটের লোকজন ও বাড়ির ভিতরে ভাড়াটিয়ারাও এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারেনি।বকেয়া থাকলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা তাদের নিয়ম ঠিক আছে কিন্তু
সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আগে অন্তত আমাদের জানানো উচিৎ ছিল।
ঝালকাঠি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার এমদাদুল ইসলাম বলেন, বকেয়া বিলের ব্যাপারে আমরা আগেই মাইকিং করে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। বকেয়া বিল থাকলে নিয়ম অনুযায়ী সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান আমাদের রয়েছে তবে গ্রাহককে অবশ্যই বিষয়টি অবহিত করতে হবে। লাইন বিচ্ছিন্ন করার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় যদি গ্রাহককে অবহিত করে না থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।