বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
কলকতায় ঐতিহাসিক গোলাপি বলের টেস্ট শেষ হয়ে গেছে তিন দিনেই। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুলসহ দলের বেশির ভাগ সদস্যই ফিরে গেছেন দেশে। টাইগারদের বাজে ভাবে টেস্ট হার নিয়ে এখনো চলছে আলোচনা সমালোচনা। এর মধ্যে জানা গেছে আরেক বিতর্কিত সংবাদ। কলকাতায় বাংলাদেশ দলের সঙ্গে নিযুক্ত লোকাল সুপার ভাইজার তপন চাকি ফেঁসে যাচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দূর্নীতি বিভাগের (আকসু) কাছে। অভিযোগ উঠেছে টেস্ট ম্যাচ চলাকালে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ও তা নিয়ে ড্রেসিং রুমে প্রবেম করেছেন তিনি। একটি সূত্রে জানা গেছে এই অভিযোগ করা হয়েছে ক্ষোদ ভারতীয় দলের ড্রেসিং রুম থেকেই। তবে গতকাল তপন চাকির সঙ্গে দৈনিক মানবজিমন মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনা সত্যি বললেও উড়িয়ে দেন যে কোন ধরণের ফিক্সিংয়ের সঙ্গে তার জড়িত থাকার কথা।
তিনি বলেন, ‘কি বলবো বলেন, আমাকে অযথাই ফাঁসানো হচ্ছে। আমিতো জানতাম না মোবাইর ফোন জমা দিতে হয় ম্যাচের দিনে। কিন্তু যখন আমাকে না করা হয়েছে আমি সঙ্গে সঙ্গে ফোন জমা দিয়ে দিয়েছি। আমি বুঝে করিনি, বিষয়টি। আরেকটা কথা হলো আমি ক্রিকেটকে ভালোবাসি। তাই কোন ধরণের বাজে কাজ যেমন ফিক্সিয় তা আমার পক্ষে করা সম্ভব নয়। আমি সত্যি বলছি তাই আমার কোন ভয় নেই।’
অন্যদিকে জানা গেছে তপন চাকি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের দীর্ঘ দিনের পুরো সদস্য। এক সময় তিনি ক্রিকেটও খেলতেন। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৭০ বছর ছুঁয়েছে। তাকেই কলকতায় দেয়া হেয়েছিল বাংলাদেশ দলের লোকাল সুপারভাইজারের দায়িত্ব। কিন্তু তিনি প্রথম দিন থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে ড্রেসিংরুমে প্রবেশ করছিলেন। ছবি তুলছিলেন টাইগারদের সব ক্রিকেটারের সঙ্গে। তবে বিপত্তি ঘটে যখন তিনি ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছবি তুলতে যান তখন। ভারতীয় ড্রেসিংরুম থেকেই তাকে সন্দেহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরপরই তার বিরুদ্ধে বিসিসিআইয়ের কাছে অভিযোগ যায়। পাঠানো হয় তার সিসিটিভি ক্যামেরার সব রেকর্ড। তা দেখে সন্দেহ হয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) দূর্নীতি দমন উইনিটের। সঙ্গে সঙ্গে বিসিসিআইয়ের আকসুর সদস্যরা বোম্বে থেকে কলকাতায় এসে তপন চাকিকে জিজ্ঞেসাবাদ করেন।
তপনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ তাকে বারবার মুঠোফোন ব্যবহার করতে নিষিধ করা হলেও তিনি তা করে গেছেন ক্রমাগত। এমনকি তাকে টেস্টের দ্বিতীয় দিন থেকেই বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে যেতে নিষেধ করা হয়। সেখানে তাকে আর ঢুকতেও দেয়া হয়নি। অন্যদিকে সিবিএ সূত্রে জানা গেছে তাকে (তপন) জিজ্ঞেসাবাদ শেষে থানায় মামলা করতে যেতে যাচ্ছিলেন আকসুর প্রতিনিধিরা। তবে সিবিএর সাবেক সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী ও বর্তমান সেক্রেটারি বুঝান যে সে ভুল করে বিষয়টি করেছেন। তবে সেই মুহুর্তে মামলা না হলেও আকসুকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতেই হবে। কারণ এই ঘটনা ধামাচাপ দিতে কোন ভাবেই পারবেনা আকসু। তাই তপনকে আরো তথ্যের জন্য ডাকা হবে বোম্বেতে। এরই মধ্যে তার মোবাইর ফোনের সব রেকর্ড ঘেটেও দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে তপন বলেন, ‘যদি বোম্বে তদন্তের জন্য যেতে হয় যাব। আমিতো নির্দোষ। বরংচ তদন্ত হলে ভালো আমি যে কোন কিছুই করিনি তা প্রমান হয়ে যাবে।’
তবে জানা গেছে তপন চাকি কোন ভাবেই ছাড় পাওয়া এত সহজ হবে না। কারণ ভাতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে বার ছবি তুলতে যাওয়া কোন ভাবেই ভালো চোখে নিচ্ছেননা বিসিসিআই। তপন অবশ্য বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দলকে আমি নানা ভাবে সাহায্য করেছি। ওদের হাসপাতলে নেয়া, আনা সবইতো আমি করেছি। বাংলাদেশ দলের সবাইকে জিজ্ঞেস করেন আমি কোন ভাবেই কোন ভুল কাজ করিনি।’ তবে জানা গেছে তপনের এমন সব ঘটনা শুনে বেশ বিরক্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। – মানব জমিন