বরিশাল ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ৯ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীতে যৌতুকের দাবীতে শশুর ও স্বামীর মর্মান্তিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে আছমা বেগম (২৭) নামের এক গৃহবধু। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নে এ ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয়রা জানায়, ১০ বছর আগে মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের বোতলবুনিয়া গ্রামের সৌদী প্রবাসী আমছার গাজীর মেয়ে আছমা বেগমের বিয়ে হয় মাদারবুনিয়া গ্রামের জব্বার কাজীর ছেলে রফিক এর সাথে। বিয়ের ১০ বছরে ১টি মেয়ে ও একটি ছেলের মা হয়েও সুখের ছোয়া লাগেনি আছমা বেগমের কপালে। বাবা আমছার গাজী মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়েতে হাতে স্বর্ণের বালা, চেইন, কানের দুল, ক্রোকারিজ ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মালামাল দেয় মেয়ে-জামাইকে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে আছমার স্বাভাবিক জীবন। মাঝে মধ্যে মারধরসহ খেতে না দেয়ার মত অমানবিক জীবন কাটাতে হতো আছমাকে। দিনের পর দিন অনেকটা নিরবেই অত্যাচার নির্যাতন সয়ে আসছে আসমা। অবশেষে রফিক বায়না ধরে তাকে ব্যবসা করার জন্য আছমার বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। এতে অস্বীকার করলে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায় আছমার ওপর। এমনকি শরীরের গোপন অঙ্গে কৌশল করে পেটানো হয়েছে যাতে কাউকে দেখাতে না পারে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জখম করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। বাবার সংসার থেকে টাকা আনতে ব্যর্থ হলে আছমা বেগমের ওপর চলে নির্যাতনের ষ্টিমরোলার। ঘরে ১টি মেয়ে ও একটি ছেলে আসায় স্বামী সংসারে অব্যাহত নির্যাতন বছরের পর বছর মুখ বুজে সহ্যকরে আছমা। এনিয়ে একাধিকবার স্থানীয় বিচার শালিস মেনেও সুরাহা পায়নি আছমা বেগম। ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে নিজের বাড়ির উঠানে ফেলে আছমাকে গাছের সাথে হাত-পা বেধে বেধরক লাঠি দিয়ে দফায় দফায় পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে যৌতুক লোভী শশুর জব্বার কাজী ও স্বামী রফিক। লাঠি পেটায় অজ্ঞান হয়ে যায় আছমা। এরপর বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে আছমাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। আসমা বর্তমানে ২৫০ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতালে চিকিৎসারত আছে। আসমা তার পাষন্ড স্বামীর বিচার দাবী করেন।