বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
শামীম আহমেদ ॥ বরিশাল জেলা আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমীর শিক্ষক মিলনায়তনের পরিবর্তে ছাত্রীদের কমন রুমে বাথরুমের দরজার উপরে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানিয়ে রাষ্ট্রীয় অবমমানার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ওই বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুদ্ধ
শিক্ষার্থীরা শহরে মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের।
এ ঘটনা তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শেষে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক মিলনায়তনের সামনে জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি অবমাননাসহ প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রীর বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। তাদের বিক্ষোভে সমাবেশে যোগ দেয় বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরাও।
এসময় প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রী স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষকদের কাছে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার প্রার্থনা করে আন্দোলনকারীরা। এসময় ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমীর শিক্ষক কাউন্সিলের সভাপতি মিজানুল হক, সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ কুমার বাড়ৈ, শিক্ষক নেতা মাওলানা ফজলুল হক, আবুল কালাম আজাদসহ শিক্ষক নেতার উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত শিক্ষক নেতারা প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রীর কাছে জিম্মি হয়ে আছেন জানিয়ে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়
সাধারন জনগনও। বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ওসি (তদন্ত) মো. নকিব আকরাম হোসেন, এসআই নাসির উদ্দিনসহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা। পরে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির
সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাসের অফিসে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের রাস্ট্রীয় ছবি অবমাননাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার ১২ দফা অভিযোগ তুলে ধরেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বাপ্পী হাওলাদার, লিমন ফকির, বাপ্পা হাওলাদার, শিক্ষার্থী মো. জাবের খান।
এসময় উপজেলা ছাত্রলীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি উজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ বর্ণনার সময়ে সেখানে উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার নির্বাহী অফিসারের কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তিনি জরুরী কাজে উপজেলা বাইরে রয়েছেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি বিদ্যালয়ে তার নিজের চেয়ারে বসে পরে সব
কিছু বলবেন বলে জানান। যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাকাল ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, বিক্ষুব্ধরা প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছে।
বিষয়টি স্থানীয় অভিভাবক এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ সাথে আলোচনা করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা
করবেন। পাশাপাশি ছবি অবমাননাসহ বিভিন্ন অনিয়ম তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে তিন দিনের সময় দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।