বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
শামীম আহমেদ ॥ রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম আসার প্রতিবাদে বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় নগরীর ফকিরবাড়ী সড়কের দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জেলা বাসদের সদস্য সচিব ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী লিখিত বক্তব্য পাঠের মধ্যদিয়ে বলেন, বিজয়ের ৪৮ বছর পর ভুলে ভরা রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করে একটা প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। এই রাজাকারের তালিকায় কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের নাম এসেছে তা তদন্ত করে এর নেপথ্যে জড়িতদের শান্তির আওতায় আনতে হবে। একইসাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জনরোষের কারণেই সরকার এই তালিকা স্থগিত করেছে। তবে আমরা মনে করি রাজাকারদের এই তালিকা স্থগিত করলেই হবেনা, এটা বাতিল করতে হবে। এরপর কমিশন গঠণ করে বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে রাজাকারের তালিকা তৈরী করে তা যাচাই-বাচাই করে প্রকাশ কতে হবে। অন্যথায় গণআন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা দাবি আদায়ে সচেষ্ট হবো।
ডাঃ মনীষা আরও বলেন, বিজয়ের ৪৮ বছর পরে রাজাকারদের তালিকা তৈরির নামে এক মর্মান্তিক প্রহসনের নাটক করা হয়েছে। সারাদেশে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারীদের নাম রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হলো। এ তালিকা নিয়ে সারাদেশের মানুষের আন্দোলন-ক্ষোভ-বিক্ষোভ, যুক্তি-
তর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত এটি স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেশবাসীর কাছে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরতে চাই। সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের মতো এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয়ে রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্যদের নাম কীভাবে যুক্ত হলো? কারা এই চক্রান্তের সাথে যুক্ত? এগুলো অবিলম্বে চিহ্নিত করতে হবে এবং চক্রান্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মনীষা চক্রবর্তী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, কোনো মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য রাজাকার তালিকা থেকে নাম কাটানোর আবেদন করা চরম লজ্জা আর অপমানের বিষয়। তাই কোনোভাবেই তাদের এই অপমান করা যাবেনা। বরং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে অবিলম্বে এই পরিবারগুলোর কাছে ক্ষমা চেয়ে লিখিত চিঠি পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের পরস্পরবিরোধী দোষারোপের বক্তব্যের মাধ্যমে এই দুই মন্ত্রণালয়ের চরম অবহেলা এবং অদক্ষতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। অবিলম্বে এই দুই মন্ত্রণালয়ের অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বাসদের আহবায়ক ইমরান হাবিব রুম্মনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।