বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
কর্মী পাঠাতে অনিয়ম করলে কোনো রিক্রুটিং এজেন্সিকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ার করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট আমাদের সমস্যা না। আমাদের লক্ষ্য স্বল্প খরচে (এক লাখ ৬০ হাজার টাকায়) মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো।
এছাড়া মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, সৌদি সরকারের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নিজেদের কঠোর অবস্থান তুলে ধরায় নির্যাতিত হয়ে নারী কর্মী ফেরতের প্রবণতা কমেছে।
দেশের অর্থনীতিতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ১ কোটির বেশি প্রবাসী শ্রমিকের পাঠানো অর্থ। বিদায়ী বছরে ১৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধিতে মোট রেমিটেন্স ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ২০১৯ সালে ৭ লাখ ১ হাজার কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫০ হাজার জন বেশি। সবচেয়ে বেশি কর্মী পাঠানো ৫ জেলা ছিল কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল ও ঢাকা । মোট কর্মীর মধ্যে ৪৪ শতাংশ দক্ষ, ২০ শতাংশ আধাদক্ষ এবং বাকিরা অদক্ষ হিসেবে বিদেশে গেছেন।
রোববার (০৫ জানুয়ারি) প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় দক্ষ কর্মী পাঠাতে নানমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
বিদেশে কর্মী পাঠাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রতারণা প্রতিরোধে টাস্কফোর্স কাজ করছে বলে জানানো হয়। বলা হয় গত বছর অনিয়মে অভিযুক্ত ২ শতাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে, ১ টির লাইসেন্স বাতিল এবং স্থগিত করা হয়েছে ২টির ।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, আমাদের বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা কমেছে এটা ঠিক। কিন্তু সারাবিশ্বের চাহিদারও পরিবর্তন এসেছে। তা হলো দক্ষকর্মীর চাহিদা। এটা না দিতে পারলে আমরা ফেল করবো। অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি দক্ষ শ্রমিক করার। আমরা লাখ লাখ কর্মীর কথা বলে থাকি। কিন্তু দক্ষ কতজন পাঠাচ্ছি, মাত্র হাজার হাজার। এখানে আমাদের আমুল পরিবর্তন আনতে হবে। দক্ষ শ্রমিক বাজারে এলে আমাদের বাজারও বাড়বে। এজন্য আমাদের ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে ১৬৪টিতে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য ও নির্বাচনী ইশতেহারে ছিলো প্রতি উপজেলা থেকে এক হাজার দক্ষকর্মী পাঠাবো। কিন্তু আমাদের সব উপজেলাতে এখনও টিটিসি স্থাপন করতে পারিনি। এজন্য আমরা বাকি সবকয়টি উপজেলার জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করে জমা দেওয়া হবে টিটিসি নির্মাণের জন্য।
এসময় তিনি মালয়েশিয়া বাজার নিয়ে বলেন, এই বাজারটি অনেকদিন ধরে খোলা হচ্ছে না। আমি চাই না আগের মতো পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ করে সেখানে যাক। আর জঙ্গলে লুকিয়ে থাকুক। আমরা সে ধরনের কোনো চুক্তি করিনি। আমাদের লক্ষ্য হলো সরকার যে রেট নির্ধারণ করে দেবে তা দিয়েই যেতে হবে। এই সরকার আসার পর মালয়েশিয়ার বাজার নিয়ে যে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কোনো ছোট অনিয়ম করলেও আমরা কাউকে ছাড় দিতে রাজি না। অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দেবো না। সিন্ডিকেট আমাদের সমস্যা না। আমাদের লক্ষ্য স্বল্প খরচে এক লাখ ৬০ হাজার টাকায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো।
নির্বাচনী ইশেতহার অনুযায়ী, প্রতি উপজেলা থেকে বছরে কমপক্ষে ১ হাজার কর্মী বিদেশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি পূরণ এবং নতুন নতুন শ্রমবাজার তৈরিতে কাজ চলছে বলে জানান মন্ত্রী।