দখিনের ৯ ধানের শীষের প্রার্থী বছরজুড়ে লাপাত্তা

  • আপডেট টাইম : জানুয়ারি ০৬ ২০২০, ১৩:২৪
  • 1074 বার পঠিত
দখিনের ৯ ধানের শীষের প্রার্থী বছরজুড়ে লাপাত্তা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

স্টাফ রিপোর্টার \ দক্ষিণাঞ্চলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শিষ নিয়ে নির্বাচন করা ৯ হেভিওয়েট প্রার্থী গত এক বছর নিজ এলাকা থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। ভোটের পর তাদের অধিকাংশই নির্বাচনি এলাকায় যেমন ফিরে আসেননি, তেমনি অসহায় নেতাকর্মীদেরও খোঁজ নেননি। বিশেষ করে বিএনপির প্রার্থীরা দলীয় কর্মসূচিতেও অংশ নেননি। বছর শেষে এ নিয়ে ক্ষোভ ঝরছে বিএনপিসহ জোটের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মাঝে। তবে এসব নেতা এক বছরেও নির্বাচনি এলাকায় না যাওয়ার কারণ হিসেবে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়েছেন।

বিভাগের ছয় জেলায় খোঁজ নিয়ে গত এক বছর নির্বাচনি এলাকায় অনুপস্থিত ৯ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন দলের বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের জহির উদ্দিন স্বপন, বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সরদার শরফুদ্দিন সান্টু, পটুয়াখালী-৩ আসনের গোলাম মাওলা রনি, ভোলা-২ আসনের হাফিজ ইব্রাহিম, ভোলা-৪ আসনের নাজিম উদ্দিন আলম, বরগুনা-২ আসনের অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুবুর রহমান। এছাড়া পিরোজপুর-২ আসনের ২০ দলের শরিক লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াতে ইসলামীর শামীম সাঈদী এবং বরিশাল-৪ আসনের নাগরিক ঐক্যের নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে করেছিলেন। ভোটের পর থেকে তারা নির্বাচনি এলাকা থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছেন বলে সাধারণ নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মীর কাজ শুধু ভোটকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয়। শুধু ভোটের সময় উপস্থিত হলে ভোটারদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব এক বছরেও
দেখা দেয়। সরোয়ার বলেন, আন্দোলনে শীর্ষ নেতারা মাঠে থাকলে তৃণমূলের কর্মীরা মনোবল ফিরে পান। এখন যারা মাঠে থাকবেন না, আগামীতে তাদের মনোনয়ন দেওয়া-না দেয়ার বিষয়টি দলকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের দাপটে ধানের শীষ প্রতীকের এসব প্রার্থী ছিলেন কোণঠাসা। বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, রাষ্ট্রকে কাজে লাগিয়ে আ.লীগ ওই নির্বাচনে জালিয়াতি করেছে। গত এক বছরে এ অবস্থার বিরুদ্ধে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় বিএনপি প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তিনিও গত এক বছরে এলাকায় যাননি। কারণ হিসেবে বিএনপি নেতা স্বপন বলেন, তার নির্বাচনি এলাকার সরকারি দলের লোকজন এত বেপরোয়া যে, ‘বাবার কবর জিয়ারত’ করতে গিয়েও বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।
গত বছর ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বরিশাল-২ আসনের প্রার্থী সরদার সরফুদ্দিন সান্টু বানারীপাড়া পৌর শহরে প্রবেশের সময় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই রাতেই নির্বাচনি এলাকা থেকে লাপাত্তা হন সান্টু। বরিশাল-৪ আসনের প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর গত ডিসেম্বরে নির্বাচনের এলাকায় গেলেও ভোটের পর নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন তিনি।
পিরোজপুর-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর শামীম সাঈদী ও পিরোজপুর-২ আসনে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ধানের শীষ প্রতীক পেলেও অন্য দলের নেতা হওয়ায় তাদের সঙ্গে ছিলেন না স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। ভোটের পরে এ দুই নেতা আর এলাকা পা রাখেননি।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সম্পর্কে ভাÐারিয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদার বলেন, জেপি প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ইরান নির্বাচনি এলাকা ছেড়ে যান। এখন এলাকায় আসেন কিনা তা জানা নেই। তবে মোস্তাফিজুর রহমান ইরান সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ভোটের দিন মাঠে ছিলেন। পরে নির্বাচন বর্জন করে চলে আসেন।
এক সময়ের আ.লীগের আলোচিত এমপি গোলাম মাওলা রনি গত বছর নির্বাচনের আগে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হয়ে এলাকায় আসেন। নির্বাচনের একদিন আগে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে এলাকা ছাড়েন।
দশমিনা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আমিনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পর রনি এলাকায় আসেননি, কারও সঙ্গে যোগাযোগও রাখেন না।
এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি বলেন, একাদশ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভিন্নমতের লোকজন দশমিনা-গলাচিপায় হাঁটতেও পারে না। তিনি ভোটের পর আর নির্বাচনি এলাকায় গিয়েছেন কিনা এ প্রসঙ্গে রনি বলেন, ‘এলাকায় যাওয়া সম্ভব নয়, পরিবেশও নেই। গেলেই মামলা-হামলার শিকার হতে হবে।’ ভোলা-২ আসনের হাফিজ ইব্রাহিম, ভোলা-৪ আসনের নাজিম উদ্দিন আলমও গত ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি এলাকায় যাননি।
বরগুনার পাথরঘাটা পৌর বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমান চাপরাশী বলেন, গত বছর সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী খন্দকার মাহবুব হোসেন ভোটগ্রহণের দুই দিন পর নির্বাচনি এলাকা ত্যাগ করেন। তারপর আর এলাকায় আসেননি।
এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু বলেন, প্রহসনের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে ত্যাগীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ওই সময়ে বিএনপি বেইমান, মুনাফেকদের ধরে এনে মনোনয়ন দিয়েছেন।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীরা মনোনয়ন পাওয়া এমপি প্রার্থীদের ওপর ক্ষুব্ধ। তারা জানিয়েছেন ধানের শীষের এমপি প্রার্থীরা এলাকায় আসেন না। নেত্রীর মুক্তির কোনো কর্মসূচিতেও বেইমানদের দেখা যায়নি। তিনি বলেন, দলেরও দায়িত্ব ছিল যারা মনোনয়ন পেয়ে রাজপথে থাকেনি তাদের চিহ্নিত করা

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

ফেসবুক কর্নার

শিরোনাম
কোটার হার পরিবর্তন করতে পারবে সরকার, হাইকোর্ভোলায় কোটাবিরোধীদের পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠাল তির-ধনুক দিয়ে বিবিসি সাংবাদিকের স্ত্রীসহ দুইবদলে যাওয়া পরীমনি১০ জনের দল নিয়ে উরুগুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে কলমসংবাদ সম্মেলন ডেকেছে এনটিআরসিএশিক্ষার্থীরা বোধহয় সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছেনজেলেদের চাল আত্মসাতের বিচার দাবিতে মানববন্ধবরিশালে পুলিশের বাঁধা ডিঙিয়ে মহাসড়ক অবরোধ শিপুলিশকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশে সতর্কতার অনুরোধঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ২ বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মের ছুটি কমল, শনিবাপ্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ভারত যাচ্ছেনওয়েস্ট ইন্ডিজকে গুঁড়িয়ে সুপার এইট শুরু ইংল্যদক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে লড়াই করে হারলো যুক্তরা
%d