বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
স্টাফ রিপোর্টার \ তিনি সরকারী বেতনভ‚ক্ত শিক্ষক। বরিশাল বিএম কলেজের বাংলা বিষয়ে পড়ান। কলেজ থেকে যে বেতন পান তার ১০গুন তিনি আয় করছেন কোচিং ব্যবসা করে। তাও কলেজ সময়ে। সকাল ৯টা থেকে তিনি ব্যাচ পড়ান শুরু করেন। চলে রাত অব্দি। তবে এর চেয়ে গুরুতর অভিযোগ তার নৈতিক স্ফলন নিয়ে। নারী ঘটিত কয়েকটি ঘটনায় জড়িয়েছেন তিনি। সহজ সরল শিক্ষার্থীদের উপর হামলে পড়েন প্রায়শইঃ। বাদ যান না ছাত্রীরাও। শনিবার তার নির্যাতনের শিকার হয়ে এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হন। তিনি নিজেও শিক্ষার্থীর উপর নির্যাতনের কতঅ স্বিকার করে বলেছেন সামান্য চড় থাপ্পড় দিয়েছি, এর বেশি কিছু নয়। কোচিংবাজ এই শিক্ষকের নাম তরিকুল ইসলাম।তিনি কলেজের সহযোগি অধ্যাপক। কলেজ অধ্যক্ষ জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
সোমবার তার কোচিং গৃহে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে চোখ চড়াকগাছ হয়ে উঠে। সকাল ৯টায় তিনি অবলীলায় কোচিং করে যাচ্ছেন। অক্সফোর্ড মিশন স্কুলের পাশে শিখণ কোচিং সেন্টারের একটি রূম ভাড়া নিয়ে তিনি প্রকাশ্যেই কোচিং চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি ব্যাচে ২০জন করে শিক্ষার্থী। ৫টি ব্যাচ পড়ান। ছাত্র প্রতি হাজার টাকা নেন তিনি। অর্থাৎ ১০০জন ছাত্রের কাছ থেকে মাসে তিনি লাখ টাকা আয় করেন।
তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ কোচিং করানোর সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উপর হাত চালান। গত শনিবার সরকারী সৈয়দ হাতেমআলি কলেজের ইন্টারমিডিয়েটের ১ম বর্ষের ছাত্র নাহিদ হোসেন অভিকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসাও নেন। পরিবার থেকে মিডিয়ার সাথে কথা বলতে না চাইলেও হাসপাতালের ভর্তির কাগজ সংগ্রহ করা হয়েছে। তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তার হাতে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়াফি ও তাজবি নির্যাতনের শিকার হন। ছাত্রের গায়ে হাত তোলার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, পড়াতে গেলে চড় থাপ্পড় ২/১টা মারতেই হয়। এটা নির্যাতনের মধ্যে পড়ে না।
একজন সরকারী কলেজের শিক্ষক কিভাবে কলেজ সময়ে কোচিং করান তা নিয়ে কলেজেই নানা গুঞ্জন রয়েছে। ক্লাশে তিনি প্রায়শঃই অনুপস্থিত থাকেন।সম্প্রতি তিনি কলেজে একটি নারী ঘটিত ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক তাকে এ ঘটনায় রক্ষা করেন। গতকাল তার বিষয়ে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুর রহমানের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, শিক্ষক তরিকুল ইসলামের বিষয়ে তার কাছে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে একবার নারীঘটিত কেলেংকারীতেও জড়িয়েছেন বলে জানান। তিনি তার বিষয়ে মন্ত্রনালয়কে অবহিত করেছেন। শিক্ষার্থী নির্যাতন ও কোচিং বিষয়ে তার বিরুদ্ধে তিনি দ্রæত একশনে যাবেন বলেও জানান।