বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
স্টাফ রিপোর্টার \ উত্তর কাউনিয়া হাউজিং এলাকার পাশেই শেরে বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ২৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত। এ স্কুলের দ্বিতল ভবনের ঠিক মাঝ বরাবর উপর দিয়ে ৩৩ হাজার কেভির বৈদ্যুতিক ভোল্টের তার টানা রয়েছে। স্কুল কতৃপক্ষ দাবি করেছেন নিরাপত্তার স্বার্থে তারা একাধিকবার এ তার সরিয়ে নেয়ার আবেদন করেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। গত শুক্রবার স্কুল বন্ধের দিন ক্রিকেট বল কুড়াতে এক ছাত্র ছাদে উঠা মাত্র বিদ্যুতায়িত হয়। ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ছেলেটিকে উদ্ধার করে। পরে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এরপরও টনক নড়েনি বিদ্যুৎ বিভাগের। তাদের দাবি পর্যবেক্ষণের পর বিষয়টি নিয়ে তারা চিন্তাভাবনা করবেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের জীবন যেমন গুরুত্বপুর্ন, বিদ্যুৎ সরবরাহও তাদের কাছে তেমনি গুরুত্বপুর্ন।
১৯৯৩ সালে কাউনিয়া হাউজিং এলাকায় আলহাজ্ব কাজি মোখলেছুর রহমান ও তৎকালীন কমিশনার আলমগীর হোসেন আলমের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় শেরে বাংলা নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তখন একতলা টিনের ঘরে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এলাকার মানুষের সহায়তায় দ্রæত এর ব্যপ্তি ঘটে। বাড়তে থাকে শিক্ষার্থী সংখ্যা। ৪ বছর আগে সরকার একটি দ্বিতল ভবন এখানে স্থাপন করে। আর তখনই ঘটে বিপত্তি। একতলা টিনের ঘরের অনেক উপর দিয়ে ৩৩ কেভি বিদ্যুতের লাইন টানা থাকায় সেটি নিরাপত্তা নিয়ে শংকা ছিল না। কিন্তু দ্বিতল ভবন নির্মানের পর দেখা যায় এটি ঠিক স্কুলের ছাদের উপর মাঝ বরাবর তারগুলো রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার বিদ্যুৎ বিভাগের নজরে বিষয়টি আনলেও কেউ সাড়া দেয়নি। গত ৬ মার্চ শুক্রবার ছিল স্কুল বন্ধ। ছেলেরা সকালবেলা ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বল পড়ে ছাদের উপর। স্কুল বন্ধ থাকায় পাশের একটি কাঠাল গাছের মাধ্যমে ছাদে উঠে আলামিন নামের একটি ছেলে। সে এই স্কুলেরই ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। তার রোল ৬৪। ছাদে উঠামাত্র ৩৩ কেভির বিদ্যুতের তার তাকে টেনে নেয়। তার সহপাঠিদের আত্মচিৎকারে এলাকাবাসী এসে ফায়ার সার্ভিসে সংবাদ দেয়। তারা মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতাল কর্তপক্ষ কার অবস্থ্য গুরুতর দেখে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়। রিকসা চালকের ছেলে আলামিন বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ হেমায়েত উদ্দিন জানান স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৫ শত শিক্ষার্থী রয়েছে। ৬ মাস আগেই এখানে দ্বিতল ভবনটি সম্প্রসারিত করে ৫ তলা করার জন্য সরকারী দরপত্র সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিদ্যুতের তারের কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান একাধিকবার স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কেউ সাড়া দেয়নি।
এ ব্যাপারে বিদ্যুতের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অমূল্য কুমার সরকারের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ৩৩ কেভির তার সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থার দিকে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা যেমন গুরুত্বপুর্ন, তেমনি মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহও গুরুত্বপুর্ন। তারপরও পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।