বরিশাল ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে মহর্রম, ১৪৪৬ হিজরি
বানারীপাড়া প্রতিনিধি।। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বেতাল গ্রামে অনুষ্ঠিত ২২৫ তম ঐতিহ্যবাহী সূর্যমণি মেলা সকল প্রকার অশ্লীলতাকে না বলে সুষ্ঠুভাবে শেষ হচ্ছে আজ ১০ মার্চ। এর আগে ২৫ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যবাহী এ মেলার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয়েছিলো। প্রতি বছর মাঘি পূর্ণিমার শুক্লা তিথিতে সূর্য পুজার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী’রা এ মেলার আয়োজন করে থাকেন বলে জানাগেছে।
কথিত আছে আজ থেকে ২২৫ বছর আগে মাঘী পূর্ণিমার শুক্লা তিথিতে বর্তমানে মেলার মাঠে যেখানে সূর্য দেবের মন্দির রয়েছে,ওই স্থানে তখনকার গঙ্গু সরকারের নিজস্ব চাষীরা চাষ করতে গিয়ে তাদের লাঙ্গলের ফলা আটকে যায়। চাষ বন্ধ
রেখে তারা দেখতে পান লাঙ্গলের ফলার মাথায় মূর্তি আকৃতির কিছু একটা আটকে আছে। চাষীরা ঘটনাটি তাদের মালিক গঙ্গু সরকারের পরিবারের কাছে গিয়ে বলেন। তারা এসে লাঙ্গলের ফলাটি যেখানে আটকে গেছে সেখানে খুঁড়ে দেখতে পায়
সূর্য আকিৃতির একটি কষ্টি পাথরের মূর্তি। ওইদিন রাতে গঙ্গু সরকারের মা সপ্নে দেখেন মূর্তি প্রাপ্তির স্থানে পুজা দেয়ার জন্য। সকালে তিনি সন্তানদের
জানালে তারা মূর্তিটি প্রাপ্তি স্থানে স্থাপন করে পুজার ঘর তৈরি করেণ ও তাদের ধর্মীয় কাজ সম্পাদন করেণ। তারপর থেকে প্রতি বছরের মাঘী পূর্ণিমার শুক্লা তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সূর্য পুজার মাধ্যমে সূর্যমণি মণির মেলার আয়োজন করে আসছে। প্রথমে ৩,পরে ৭ ও কালের বিবর্তনে বর্তমানে ১ মাস ব্যপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। এক সময় সূর্য মূর্তিটি মন্দির থেকে হারিয়ে গেলে
গঙ্গু সরকারের পরিবারের অন্য সদস্য’রা সাদৃশ্য আরেকটি মূর্তি তৈরি করে পুজা ও মেলার আয়োজন করতেন। দেশ স্বাধীনের আগে গঙ্গু সরকার পরিবার সহ ভারতে চলে যান। তবে যাবার আগে বাড়ির পাশের চেরাগ আলী মোল্লাকে তাদের সমস্ত সম্পত্তির অধিকার বুঝিয়ে দিয়ে যান এবং বেতাল গ্রামের ভট্টাচার্য্য বাড়ির সদস্যদের এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে সূর্য পূজার মাধ্যমে মেলার আয়োজন এবং চেরাগ আলী মোল্লার পরিবারকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশে থাকার অনুরোধ জানিয়ে ছিলেন বলেও জানা গেছে। পরে চেরাগ আলী মোল্লার ছেলে খবির উদ্দিন মোল্লা ও ভট্টাচার্য্য পরিবারের কয়েক পরুষ পেরিয়ে বর্তমানে কৃষ্ণ কান্ত ভাট্টাচার্য্য সূর্য পুজার মাধ্যমে মেলার আয়োজন করে থাকেন বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, মেলা আয়োজনে এখনও ভট্টাচার্য্য পরিবারের পাশে থাকছেন চেরাগ আলী মোল্লার উত্তরসূরী’রা এবং এলঅকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মেলা উদযাপনের কমিটি গঠন করা হয়। এই মেলা বরিশালের বানারীপাড়ায় অনুষ্ঠিত হলেও জেলার পাশ্ববর্তী সব উপজেলা,পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর, স্বরূপকাঠি, কাইখালিসহ বিভন্ন এলাকার মানুষের সমাগম ঘটে।