বরিশাল ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
জিয়া শাহীন/ মাত্র একমাস হল ঢাকায় বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩য় শ্রেণী কর্মচরী পরিষদের যাত্রা শুরু হয়। এরই মধ্যে তা নিয়ে সারা দেশের নিপিড়িত তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। এরই মধ্যে জেলায় জেলায় কমিটি গঠন শুরু হয়ে গেছে। একাধিক উপজেলায়ও কমিটি গঠন হয়েছে। আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে সব স্থানে।
বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারীদের দীর্ঘদিনের চাপা কষ্ট দেখেনি শিক্ষক সমিতিগুলো। তারা শুধু নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে ব্যস্ত। জাতীয়করণ বাদ দিয়ে এখনও ১৬ থেকে ২১ দফা নিয়ে আন্দোলন করছে। আর এসব দফায় নেই কর্মচারীদের কথা। উল্টো উৎসব ভাতায় কেন কর্মচারীদের ৫০ ভাগ দেয়া হয় তা নিয়ে সোচ্চার শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। শেষ পর্যন্ত ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীরা নিজেরা সংগঠিত হবার সিদ্ধান্ত নেয়। কয়েকমাস আলোচনার পর ঢাকায় একটি সভার মাধ্যমে গঠন করা হয় ‘ বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩য় শ্রেণী কর্মচারী পরিষদ’। অভিজ্ঞ নেতা, খিলগাও মডেল বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড কলেজের অফিস সহকারী রফিকুল ইসলাম মন্টুকে সভাপতি এবং ফেনির হাবিবুর রহমানকে সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। এরপরই নেতৃবৃন্দ সারা দেশের কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য মাঠে নামেন। সাড়াও পড়ে ব্যাপক। এরই মধ্যে বরিশাল, ভোলা,
পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, ফেনি, বৃহত্তর চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ সহ বিভিন্ন জেলায় প্রস্তুতি কমিটি সম্পন্ন হয়েছে। বান্দরবনে ১৩ আগষ্ট অনুষ্ঠিত হবে সম্মেলন। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সাজ সাজ রব পড়েছে। কর্মচারী ছাড়াও জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষক নেতারাও থাকছেন সম্মেলনে। এর পরই অনুষ্ঠিত হবে ভোলা , ঝালকাঠী ও ময়মনসিংহের সম্মেলন। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্টু জানান, যেভাবে সাড়া পাচ্ছি তাতে আমরা বিস্মিত। এর মূল কারণ, এতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের কথা বলার কোন প্লাটফর্ম ছিল না। আজ তারা তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনার একটা ভিত্তি পেল। সম্পাদক হাবিবুর রহমান জানান, একটি স্কুলের প্রান হল তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। দিনরাত তাদের পরিশ্রম করতে হয়। কম্পিউটারের সব কাজ করতে হয়। নির্ধারিত অফিস সময় নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবদি থাকতে হয় বিদ্যালয়ে। ১০ বছর পর একটি টাইম স্কেল পেলে বেতন বাড়ে মাত্র ৪০০ টাকা। নেই কোন কম্পিউটার ট্রেনিং। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (যুগ্ম) মোঃ ইছা বলেন, আমাদের পদবি পরিবর্তন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা করতে হবে। এবজন শিক্ষক ১২৫০০ টাকায় চাকুরি শুরু করে ২৯০০০টাকায় উন্নীত হবার সুযোগ রয়েছে। আর আমরা ৯৩০০ টাকায় চাকুরি শুরু করি, শেষ হয় ৯৭০০টাকায়। এটি চরম বৈষম্য। আশা করি সরকার এ ব্যাপারে অতিদ্রুত বৈষম্য দূর করবেন। ভোলার মোঃ কামরুল জানান, কোন শিক্ষক সমিতি আমাদের কথা বলেন না, তারা তাদেরকে নিয়ে ব্যস্ত। তাই আমাদের দাবি দাওয়ার জন্য একটি সংগঠনের জরুরী প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী পরিষদ গঠিত হওয়ায় আমরা এখন আমাদের দাবি দাওয়া তুলে ধরতে পারব।