বরিশাল ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রায় পাঁচ মাস ধরে রসুই ঘরের অতি প্রয়োজনীয় মসলা জাতীয় পণ্য পেঁয়াজের দাম নিয়ে অস্থিরতা যেন কাটছে-ই না। নানা অজুহাতে একের পর এক দাম বেড়েই চলেছে। এর মাঝেই ‘মরার খাড়ার ঘা’ হয়ে দাম বেড়েছে অন্যান্য মসলারও।
জানা যায়, রাজধানীর খুচরা বাজারে এক মাসের ব্যবধানে এলাচির দাম বেড়েছে দুই দফা। কারওয়ান বাজার, কাঁঠাল বাগান, রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, শান্তিনগর বাজারে প্রতিকেজি এলাচি বিক্রি হচ্ছে ফ্রেশ ৩ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা, মিডিয়াম ২৮০০ থেকে ২৯০০ টাকা কেজি দরে। অথচ দুই সপ্তাহ আগেও এলাচি বিক্রি হয়েছে ফ্রেশ ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকা, মিডিয়াম ২৬০০ টাকা কেজি দরে।
৩০০ টাকা বেড়ে জয়ত্রী বিক্রি হচ্চে ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকায়, ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়ে লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়।
কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়, প্রতিকেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জিরা, ৫০ টাকা বেড়ে দারুচিনি ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে খোলা হলুদ ও মরিচ গুড়ার দাম। হলুদ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা, মরিচ ২৭০ টাকা কেজিতে।
অন্যদিকে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ১৭০ টাকা, মিডিয়াম ১৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান ১৬০ টাকা, আদা দেশি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, চায়না আদা ১৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে পেঁয়াজের। বাজারে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে সবজিটির। এসব বাজারে আমদানি করা বার্মা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৫০ টাকা কমে এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। দাম কমেছে মিশর ও চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজেরও।
সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে চীনা পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে থেকে ৭৫ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। অন্যদিকে ২০ টাকা কমে আমদানি করা মিশরীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ১২০ কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।
দাম কমেছে গাছসহ দেশি পেঁয়াজ এবং নতুন দেশি পেঁয়াজের। কেজিপ্রতি ৩০ টাকা কমে গাছসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। দেশি নতুন পেয়াজ কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজিদরে।
তবে বাজারে দেশি পেঁয়াজ কম থাকলেও তা আগের দামেই বিক্রি চলছে। বর্তমানে গাছসহ দেশি পেঁয়াজ, আমদানি করা মিশর, চায়না পেঁয়াজের দাম কমলেও এখনও ২৪০ টাকা চাওয়া হচ্ছে দেশি পেঁয়াজের দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কমায় এ প্রভাব খুচরাতেও পড়েছে। তাই আগের থেকে কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে।
টিঅ্যান্ডটি বাজারের বিক্রেতা রিপন মিয়া বলেন, পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ আসায় দাম কমেছে। তাই খুচরা বাজারে দাম কম, তবে পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ না থাকায় এটা আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে পেঁয়াজ নিয়ে নানা অভিযোগ আগে থেকেই রয়েছে। সেখানে নতুন করে ঘি ঢেলেছে মসলার দাম বাড়ার বিষয়টি। বিক্রেতারা বলছেন, মসলার নতুন আমদানি না থাকায় মোকামে বাড়তি দাম। সরবরাহ বাড়তে তা কমে যাবে।
শান্তিনগর বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেন, মনে হচ্ছে পুরো দেশ-ই যেন ব্যবসায়ীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা নিত্যপণ্যে দাম নির্ধারণ করে দেয়, সংশ্লিষ্টদের বাজার তদারকি নেই।
‘পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক না, এর মাঝে এক মাসে দুই বার দাম বেড়েছে এলাচি, দারুচিনিসহ অন্যান্য মসলার। পেঁয়াজের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা এবার অন্য মসলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’
তবে এই ক্রেতার বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন খিলগাঁও কাঁচাবাজারের বরিশাল স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী কবির হোসেন। তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে সব মসলার দাম বেশি। কোরবানির পর পাইকারি বাজারে মসলার চালান না আসায় দাম বেশি। তবে মসলার আমদানি হলে দাম কমে যাবে।
এদিকে দাম স্থিতিশীল রয়েছে চাল, ডালসহ অন্যান্য পণ্যের। আর বাজার ভেদে ১০-২০ টাকা কম বেশিতে বিক্রি হচ্ছে মুরগি, মাছসহ নানা জাতের মৌসুমী সবজির।