বরিশাল ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার বেতাগী উপজেলায় করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই প্রতিদিনই বাড়ছে ডায়রিয়া’য় আক্রান্তের সংখ্যা। আজ শনিবার (২ মে) নতুন করে ইদ্রিস খলিফা (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। সে বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের দারুল উলুম গ্রামের আব্দুর রব খলিফার ছেলে। এ নিয়ে গত ছয় দিনের ব্যবধানে মারা গেছেন ৪ জন। অনেকে আবার করোনায় আক্রান্ত হবার ভয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন না।
বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল থেকে ২ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মোট ১৬২ জন ডায়রিয়া রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩২ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৩০ জন। প্রতিদিনই ১৫-২০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। হাসপাতালে খাবার স্যালাইনের সংকট না থাকলেও কলেরা স্যালাইনের সংকট রয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এদিকে হাসপাতালে কলেরা স্যালাইনের সংকট দেখা দিলে তাৎক্ষনিকভাবে সিভিল সার্জন স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০০ ব্যাগ স্যালাইন সরবরাহ করে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন। এরপরই বুধবার (২৯ এপ্রিল) কলেরা স্যালাইনের সংকট নিরসনে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৫২ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
জানা যায়, বরগুনার বেতাগী উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসার একটি বড় কেন্দ্র বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগী ভর্তি ছিল। এরপরই একজন মেডিকেল অফিসার করোনা পজিটিভ হওয়ার সংবাদে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে পুরো উপজেলা জুড়ে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আতঙ্কে অনেকেই তাই কমপ্লেক্সে আসছেন না । স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না এসে তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে বসে। বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নে শতাধিক, মোকামিয়া ইউনিয়নে অর্ধশতসহ প্রায় উপজেলার বেশীরভাগ এলাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী বাড়িতে অবস্থান করছেন।
বেতাগী উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ গোলাম রব শুক্কুর এ বিষয় বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক রোগী ডাইরিয়ায় আক্রান্ত। কিন্তু তারা করোনার ভয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাচ্ছেন না। স্বাস্থ্য কর্মীরা তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন।’
বিবিচিনি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী মনি আক্তার বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে যাবার পরামর্শ দিচ্ছি। কিন্তু বাস্তবে তা কাজে আসছে না। করোনার ভয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে তারা অনিচ্ছুক।’
বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. তেন মং বলেন,’ ঋতু পরিবর্তন ও দূষিত পানি ব্যাবহারের ফলে গত কয়েকদিন ধরে লোকজন ডায়রিয়া ও পেটের পীড়াজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। খাবার স্যালইনের সংকট না থাকলেও কলেরা স্যালাইনের সংকট ছিল। তবে এ সংকট সমাধানে ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’