৩৫ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায়, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রন ও সচেতনতা সৃষ্টিতে দৃষ্ঠান্ত স্থাপন

দায়িত্ব পালনে অবিচল জেলা প্রশাসকের ৯ যোদ্ধা

  • আপডেট টাইম : মে ১৫ ২০২০, ০০:০৬
  • 1223 বার পঠিত
দায়িত্ব পালনে অবিচল জেলা প্রশাসকের ৯ যোদ্ধা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

জিয়া শাহীন ॥ দায়িত্বটা বিশাল। যদি সেনাপতি হন জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান, তবে তার যোগ্য ৯ সেনা ছিল মাঠের যোদ্ধা। আর এদের নিয়েই প্রায় অসম্ভব দায়িত্বটাকে সহজ করে ফেলেলেন তিনি। পেলেন মানুষের অসীম ভালবাসা মিশ্রিত শ্রদ্ধা। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অর্পিত গুরু দায়িত্ব সবার পক্ষে পালন সম্ভবও ছিল না। কিন্তু জেলা প্রশাসক সব দিক দিয়েই ছিলেন সফল। ত্রান বিতরণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন, সচেতনা সৃষ্টি, সামাজিক দুরত্ব বজায়ে কঠোরতা, লকডাউন বাস্তবায়ন। আর এটা সম্ভব হয়েছে মাঠে ৮ যোদ্ধা আর অফিসের এক বিশ^স্থ সহযোদ্ধার কারণে। হয়ত জেলা প্রশাসকের সহয়াতার পিছনে আরও অনেকে রয়েছেন, তবে প্রকাশ্যে এই ৯ যোদ্ধার দৃঢ়তা. সাহসিকতা, অদম্য মনোবল তাকে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করেছে এটি বলা চলে।
মার্চের প্রথম দিকেই বিশ^ব্যাপি করোনা আতঙ্ক জাকিয়ে বসে। চীন থেকে শুরু হয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশে দেশে। ১৬ মার্চের দিকে করোনা আতঙ্ক এতটাই গ্রাস করে যে মুজিব বর্ষের সকল অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। এরপর একের পর এক শহর লকডাউন শুরু হয়। কর্মহীন হয়ে পড়ে দেশের কয়েক কোটি মানুষ। এদের বাচিয়ে রাখা, করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া আর চিকিৎসা ব্যবস্থা সরকারের কাছে গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠে। এর আগে একাধিক মহামারিতে জন প্রতিনিধদের মাধ্যেমে ত্রান বিতরণে সরকারের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, সে কারণে এবার পুরো দায়িত্ব অর্পন করা হয় জেলা প্রশাসকদের কাছে। জনপ্রতিনিধদের কাজ আমলা দ্বারা সম্ভব নয়’ এ কথাটি যেন এবার মিথ্যে প্রমান করতে সচেষ্ট হলেন জেলা প্রশাসকরা। বিশেষ করে বরিশালের জেলা প্রশাসক ত্রান বিতরণ, মোবাইল কোট পরিচালনা, টিসিবি পরিচালনা, লকডাইন বাস্তবায়নের সাথে রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের মত গুরুত্বপুর্ন কাজ চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিলেন। আবার করোনা পরিস্থিতির পুর্ন আপডেট দেয়ার দায়িত্বও ছিল তার উপর। এই কাজে সাথে পেলেন ৯ যোদ্ধাকে। ৮জন মাঠে. একজন তার সাথে। এরা হচ্ছেন এক্সিকিউটিভ মেজিষ্ট্রেট রুমানা আফরোজ, মোঃ জিয়াউর রহমান, মোঃ নাজমুল হুদা, মোঃ মারুফ দস্তেগীর, নিরুপম মজুমদার, মোঃ আতাউর রাব্বি, মোঃ সাইফুল ইসলাম এবং শরীফ মোঃ হেলাল। আর প্রতিটি মুহুর্ত, করোনার আপডেট, অভিযানের বিস্তারিত রিপোর্ট, মিডিয়া সেলের দায়িত্বে ছিলেন সহকারী কমিশনার সুব্রত বিশ^াস। এরা সবাই তরুণ এবং সাহসী এবং কর্তব্যে নিষ্ঠাবান হিসাবে এরই মধ্যে পরিচিতি লাভ করেছেন।
জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের সুনিপুন নির্দেশনার প্রতিদিনই এই ৮ যোদ্ধার একটি অংশ মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। কেউ বাজার নিয়ন্ত্রনে, কেউবা লকডাউন কার্যকরে. কেউবা সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলছে কিনা তার তদারকিতে। আর জেলা প্রশাসক এদের উপর দায়িত্ব দিয়ে ছুটেছেন নগরীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ত্রান নিয়ে। ছুটেছেন হাসপতালে। করোনা রোগির আপডেট করছেন প্রতিনিয়ত। আর মাঠে থাকা ৮ মেজিষ্ট্রেট তার নির্দেশনায় কঠোর হাতে সামলেছেন সব। ১৪ মে পর্যন্ত এরা ২৪৬টি মোবাইল কোট পরিচালনা করে ৪৭৯টি প্রতিষ্ঠান ও ৩৬৮ জনের কাছ থেকে ৩৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। ৪৭জনকে কারাদন্ড প্রদান করেছেন। ৩টি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। তদের কঠোর ও দায়িত্বশীল কাজের কারণে বরিশালে এবার রমজানে দ্রব্যমূল্য ছিল কয়েক দশকের মধ্যে সর্বনি¤েœ। টিসিবির মালামাল বিক্রয়েও সমন্বয় ছিল উল্লেখ করার মত। মানুষ অল্প দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে পেরেছে। অতি দরিদ্ররা পেয়েছেন ত্রান। কর্মহীন রিকসা চালক, শ্রমিক, তৃতীয় লিংগ হিজরা সম্প্রদায়, হরিজন, পত্রিকা হকার, সাংবাদিক সংগঠনগুলো, মাঝি মাল্লা, সাংস্কৃতিক কর্মী কেউ বাদ যায়নি। দুমুঠো অন্নের সংস্থান করতে পারাটাই জেলা প্রশাসনের মূল সাফল্য এটি অবধারিত বলা যায়। আর জেলা প্রশাসকের সাথে তার ৯ অসীম সাহসী মেজিষ্ট্রেটদেরও সাধুবাদ জানাতে হয়। যারা সেনাপতির নির্দেশ পালনে কখনও পিছপা হননি। কখনো কঠোর হয়েছেন, কখনো মানবিক।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ দুলাল বলেন, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে এবার করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি ও ত্রান বিতরণ কার্যক্রমে বরিশালবাসী সন্তুষ্ট এটি বলা যায়। ত্রান বিতরনের মত এবটি জটিল কাজ তিনি নৈপুন্যের সাথেই সামাল দিয়েছেন। তবে অন্যান্য জেলায় এখন মার্কেটগুলো বন্ধ করা হচ্ছে। বরিশালেও জেলা প্রশাসক দ্রুত এ কাজটি করবেন বলে তিনি মনে করেন। না হলে পরবর্তিতে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কষ্ট হবে।
বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাবেক সভাপতি, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, এ্যাড. এস এম ইকবাল বলেন, একজন সৎ ও সাহসী সেনাপতি থাকলে তার যোদ্ধারাও সাহসী হবেন এটি আর বলার অপেক্ষা রাখেন না। জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান নিজে সৎ, সাহসী এবং তার সাথে এক ঝাক তরুণ নির্বহিী মেজিষ্টেট থাকায় তিনি অতিসহজেই সব কিছু সু নিপুনভাবে পরিচালনা করছেন। তার এই প্রচেষ্টার কথা বরিশালবাসী দীর্ঘদিন মনে রাখবে। বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, এনডিবিএর সভাপতি, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক পুলক চ্যাটার্জিও জেলা প্রশাসকের সাথে সাথে ৯ মেজিষ্ট্রেটকেও আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এরা মাঠে অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন, কঠোরভাবে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রন করেছেন যা প্রশংসার দাবি রাখে। সামনে হয়ত আরো কঠিন সময় আসতে পারে, তাই জেলা প্রশাসনকেও আরো কঠোর ও পরিকল্পনা মত পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। তবে তিনি মফল হবেন এই কারণে যে তার হাতে একঝাক তরুণ যোদ্ধা রয়েছে।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

ফেসবুক কর্নার

শিরোনাম
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার, উজিরপুরে মিষ্টি বআমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে, প্রশ্ন প্আইপিএল ছেড়ে দেশে ফিরতে হবে মুস্তাফিজকে!ইডেনের গ্যালারিতে বসেই ধূমপান, প্রবল সমালোচনআরো ১১৮ বুদ্ধিজীবীর তালিকা দিল মুক্তিযুদ্ধ মঢাকার বস্তির বেশিরভাগ মানুষ বরিশালেরভারতে উত্তর প্রদেশে মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশ সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতলো বাংলাদেশপুরো রমজান মাস বন্ধ থাকবে প্রাথমিক-মাধ্যমিক প্রাথমিক শিক্ষকদের অনলাইনে বদলি শুরু চলতি মাভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিল মেয়েরাপাকিস্তানে ইমরান খানের জেলে হামলা, আটক ৩জাতির পিতা সংবিধানে নারীদের অধিকার নিশ্চিত কপিরোজপুরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ নিহত
%d