বরিশাল ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
হাসপাতালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছেন রাধা রানি। ছবি: হিন্দু পোস্টহাসপাতালে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছেন রাধা রানি। ছবি: হিন্দু পোস্ট
ঘটনাটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ঝালকাঠির। জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকার এক হিন্দু নারী ও তার পরিবারকে মোহম্মদ রাসেল নামে আওয়ামী লীগের এক নেতা নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দু পোস্ট।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার রাধা রানি অভিযুক্ত নেতার বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশের কাছে করা অভিযোগের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, মাসিক ১ হাজার ৭০০ টাকা চুক্তিতে সম্প্রতি মোহম্মদ রাসেলের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে রাধা রানি এক মাস কাজ করেছিলেন। কিন্তু এক মাস কাজ করার পর মোহম্মদ রাসেল তাঁকে মাত্র ৭০০ টাকা দিতে চান।
এ অবস্থায় ৭০০ টাকা মজুরি নিতে অস্বীকার করেন রাধা রানি এবং রাসেলের বাড়িতে কাজ করবেন না বলেও জানিয়ে দেন। গত ১৯ জুলাই রাধা রানিকে পুরো টাকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে পাঠান রাসেল ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু টাকা নিতে গেলে রাধা রানিকে তাঁরা আটকে রাখেন এবং বাড়ি থেকে মোবাইল চুরি করার অপবাদ দেন। তবে রাধা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
একপর্যায়ে রাধাকে প্রচণ্ড মারধর শুরু করেন অভিযুক্তরা। এতে পা-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। এ ছাড়া তাঁর শরীরে গরম পানিও ছুড়ে মারা হয়। টানা তিন ঘণ্টা নির্মম নির্যাতনের পর মারাত্মক আহত অবস্থায় রাধাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা জানতে বুধবার ঝালকাঠি প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে আজকের পত্রিকা। তিনি জানান, অভিযুক্ত মোহম্মদ রাসেল শহর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি শুধু রাধাকেই নয়, রাধার স্বামীসহ তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া তাঁর মেয়েকেও বেধড়ক মারধর করেছেন।
জানা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে স্বামী ও সন্তান সহ রাধাকে নিজ বাড়িতেই তিন দিন আটকে রেখেছিলেন রাসেল। নির্যাতনে রাধার স্বামী ৫৫ বছর বয়সী বলাই কর্মকার বাম পায়ে মারাত্মক আঘাত পান। রাধা রানির যৌনাঙ্গেও গুরুতর আঘাত করা হয়। এ ছাড়া মারধরে রাধার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে গেছে।
প্রতিনিধি জানান, মারধরের পর এ ঘটনা কাউকে না জানাতেও হুমকি দেন মোহম্মদ রাসেল। তবে খবর পেয়ে ঘটনার তিন দিন পর গত ১৯ জুলাই দুপুরে ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেকুন নাহার ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হন এবং আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। ঘটনার পর থেকে সৈয়দ রাসেল ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন।সুত্র- আজকের পত্রিকা