বরিশাল ১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২রা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
জিয়া শাহীন/ দীর্ঘ একমাস বন্ধ। সারাদিন মানুষের খাবার রান্নায় যাদের চুলার আগুনে শরীর পুড়তে হত, সেই কর্মচারীদের ঘরে এখন চুলা জ্বলে না। বলা হচ্ছিল নগরীর হোটেল রেস্টুরেন্টের কথা। কেরোনা আতংকের কারণে সরকারী নির্দেশে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ। হঠাৎ যেন একটু আলোর রেখা দেখা গেল। জেলা প্রশাসন সোমবার এক বার্তায় ইফতারী ও সেহরীর সময় হোটেলগুলো খোলার নির্দেশ দিলেন। নগরবাসীও একটু আশার আলো দেখল। ইফতারী কেনা আর ব্যাচেলারদের সেহরী খেতে সমস্যা কেটে যাবে। কিন্তু গতকাল জেলা প্রশাসনের আহবানে সাড়া দিয়ে হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো খুলেনি। ইফতারের আগে নগরময় ঘুরে ২/১টি বাদে সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ দেখা গেছে।
বরিশাল হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি বিষু ঘোষ জানান, তিনি জেলা প্রশাসকের নির্দেশ সকল সদস্যদের কাছে পৌছে দিয়েছেন। কিন্তু এ সময়ে বেশ কিছু কারণে রেস্টুরেন্ট খুলতে সদস্যরা রাজি হচ্ছেন না। তিনি জানান, রোজায় দিনে খোলা রাখা যাবে না। শুধু ইফতার বিক্রি করে খরচ উঠবে না, কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব নয়। তাদের লোকসান গুনতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগরীর প্রশিদ্ধ রেস্টুরেন্টের এক মালিক জানান, আজ খুলব, কাল ভ্রাম্যমান আদালত এসে নানা অজুহাতে হাজার হাজার টাকা জরিমানা করবে। এমনিতেই বেচব শুধু ইফতারি, সেখানে যদি গুনতে হয় জরিমানা, তাহলে খুলে লাভ কি? আরেক রেস্টুরেন্ট মালিক জানান, তার রস্টেুরেন্টে একসাথে একশ মানুষ ইফতার করত। এবার কাউকে বসিয়ে ইফতার করানো যাবে না। পার্সেল বিক্রি করতে হবে। আর তাতে বেচাকিনি যা হবে তাতে বিদু্যৎ বিলও উঠবে না। এসব নানা কারণে বরিশালের রেস্টুরেন্টগুলো প্রশাসনের আহবানে সাড়া দেয়নি। অপরদিকে ফুটপাথের ইফতার বিক্রি বন্ধ থাকায় নগরীতে এবার ইফতার কিনে খাওয়া একেবারেই বন্ধ। তবে বিত্তবানদের জন্য বগুড়া রোডের ‘নাজেম’ ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসলেও মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তদের সাধ্য নেই সেখান থেকে ইফতারি কিনে খাবার। আবার অনেক হৃদয়বান মানুষ এই সময়ে দরিদ্রদের ইফতারি দেয়ার আগ্রহ থাকলেও কিনতে না পারায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কেননা বাসায় বসে কয়েকশ মানুষের ইফতারি বানানো সহজ ব্যাপার নয়। এক সংগঠনের নেতা বললেন, হোটেল মালিকদের সাথে প্রশাসনের সরাসরি আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা করা সম্ভব।