বরিশাল ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
জিয়া শাহীন ॥ কথায় আছে উচ্চস্বরে চিৎকার করা কথার মূল্যায়ন কম হয়। ধীরে, সুস্থ্য মস্তিস্কে কথার বিচার করা গুরুজনদের বানি। জোড়ে বললেই তা সত্য হয় না। প্রসঙ্গটা লঞ্চ মালিকদের। করোনা উপলক্ষে জোড়ে জোড়ে চিৎকার করে সবাইকে শুনিয়েছিল, ভাড়া বাড়বে না একটাকাও। আগেরমতই চলবে, আগের ভাড়া। জোড়ে সে চিৎকার করা কথা শুনে আমারা বোকারমত খুশিতে ৩২ দাঁত বের করেছি। বাহঃ বাহঃ কত হৃদয়বান তারা। কিন্তু হল কি? ভাড়া বাড়েনি ঠিক। কিন্তু লঞ্চগুলো করোনা মহামারীর অন্যতম বাহনে পরিনত করে তাতে গিনিপিগেরমত মানুষ ভরে চলাচল শুরু করছে। এই দুর্যোগের সময়ও তারা রোটেশন করছে। সাধারণত রোটেশন করে প্রতিদিন ৫/৬টি লঞ্চ চলত। আর ঈদ- কোরবানীতে রোটেশন বাদ দিয়ে ২০টিরও অধিক লঞ্চ ঢাকা- বরিশাল আসা যাওয়া করত। করোনায় সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে যেখানে রোটেশন বাদ দিয়ে বেশি সংখ্যক লঞ্চ চলাচলের কথা, সেখানে মাত্র ৩/৪টি লঞ্চ চলছে। টিনের বাক্সের বাসের মত গায়ে গা লাগিয়ে যাত্রীরা লঞ্চে বসছে। এত যাত্রী যে, বন্দর কর্মকর্তা বা মেজিষ্ট্রেট নির্ধারিত সময়ের আগেই লঞ্চ ছাড়তে বাধ্য করেন।
প্রশ্ন সব সময় উঠে। জীবন আগে না ব্যবসা। রমজান এলেই বেড়ে যায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। আর ঈদ/কোরবানীতে বাড়ে গণ পরিবহনের ভাড়া। কিন্তু এই করোনায় যেখানে সাধারণ মানুষও নিজের খাবারের পয়সা দান করছে ত্রাণে, ছোট্ট শিশুটি টিফিনের পয়সা তুলে দিচ্ছে ত্রান তহবিলে, সেখানে ব্যবসায়ীদের মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসা করা কতটি শোভনীয় তা কি বলার অপেক্ষা রাখে? ৪টি লঞ্চের পরিবর্তে যদি ১০টি লঞ্চ থাকত, তাহলে সামজিক দুরত্ব বজায় থাকত। লঞ্চে ভীড়ও থাকত না। থাকত না করোনা ছড়িয়ে পড়াও আশংকাও । জাতীর এই দুঃসময়ে কার স্বার্থে রোটেশন, সে প্রশ্ন প্রশাসনও করছে না। যেভাবে মানুষ লঞ্চে ঢাকা ছুটছে, বা ঢাকা থেকে বরিশাল আসছে, তাতে বর্তমান উদ্বেগজনক করোনা পরিস্থিতির জন্য দায় কি লঞ্চ মালিকরা নেবেন না?