বরিশাল ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
রক্তের সম্পর্ক। পিতা পুত্র। এর চেয়ে মধুর সম্পর্ক আর কি হতে পারে? কিন্তু এক করোনা বুঝিয়ে দিল মা বাবা ভাই বোনের রক্তের সস্পর্ক কতটা তুচ্ছ। বাবাকে বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে যায় সন্তানরা, আক্রান্ত ছেলে জঙ্গলে ফেলে পালায় বাবা, মাকে রাস্তায় ফেলে যায় ছেলে মেয়েরা। স্বামীর করোনা আক্রান্ত শুনে ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রী। এক করোনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, বেচে থাকার আকুতির কাছে সম্পর্ক কত তুচ্ছ। অপর দিকে যে পুলিশ নিয়ে এত ছিল বিতর্ক এক করোনায় তা পাল্টে দিল। মানুষকে বাচাতে গিয়ে নিজের জীন তুচ্ছ করার নাম পুলিশ। সন্তানদের ফেলে যাওয়া মা বাবাকে বাচানোর দায়িত্বে পুলিশ, মৃত ব্যক্তিকে যখন জানাজা দাফনে কেউ নেই, তখন আছে পুলিশ। আজ বরিশালে একটি ঘটনা আবারও প্রমান করেছে আতঙ্কের কাছে সম্পর্ক কতটা তুচ্ছ, আর আতঙ্কের পুলিশ কতটা মানবিক।
ছেলেকে বরাবরের মতোই পেনশনের টাকা তুলে দিতে ছেলের বাসা থেকে অবসরপ্রাপ্ত হতভাগ্য অসুস্থ বাবা সোনালী ব্যাংকে এসেছিলেন পেনশনের টাকা তুলতে। মুঠোফোনে করোনা উপসর্গ নিয়ে হঠাৎ ব্যাংকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোনভাবে সংবাদ দেন আদরের পুত্রকে। বাবা ব্যাংকে অসুস্থ্য শুনেই পাল্টে যায় রক্তের সম্পর্কের বাধন। বাবাকে বাচানোর পরিবর্তে নিজের আত্মরক্ষাটা বড় হয়ে দাড়ায়। তাই বাবার অসুস্থতার খবরে মন গলাতে পারেনি তাঁর সন্তানকে। “আপনারা যা করার করেন “সহ অশ্রবণীয় ভাষায় তথ্যদাতা সহ কর্তব্যরত পুলিশকে এমন বিরক্তি প্রকাশে ফোনেই কেটে পরেন জন্মদাতা অসহায় বাবার আদরের সন্তান।
বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েন উপস্থিত মানুষ। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। কিন্তু বসে থাকেনি পুলিশ।খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালী মডেল থানা বিএমপি, মোঃ নুরুল ইসলাম পিপিএম ছুটে আসেন। হতভাগা পিতাকে এম্বুলেন্স যোগে উদ্ধার করে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বরিশালে উন্নত চিকিৎসা প্রক্রিয়া সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।ওসি নুরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, ” করোনা ঝুঁকিতে কেউ এগিয়ে না এলেও অসহায় ভুক্তভোগীদের সাথে বিএমপি থাকবো শেষ পর্যন্ত। “