বরিশাল ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উদ্যোগে আমন ধানের ফলনবৃদ্ধি ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে রোপা আমন ধানের ক্ষেতে পার্চিং উৎসব অনষ্ঠিত।
গতকাল ৩ সেপ্টেম্বর বৃহষ্পতিবার সকালে কালিকাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শারিকখালী গ্রামের স্থানীয় প্রায় শতাধিক কৃষকদের নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে আয়োজন করা হয় ‘‘পার্চিং উৎসব”। উক্ত পার্চিং উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বরিশাল অঞ্চল বরিশালের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আফতাব উদ্দিন। পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হৃদয়েশ্বর দত্ত এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার মার্জিন আরা মুক্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ধীমান মজুমদার, সহকারি কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ আব্দুল বারেক, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার আবদুছ ছালামসহ বিভিন্ন ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
প্রধান অতিথি বরিশাল অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আফতাব উদ্দিন বলেন “পার্চিং” পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে ধানের ক্ষতিকর পোকা নিয়ন্ত্রন করা যায় এবং ফলন বেশী পাওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে ধানী জমিতে গাছের ডাল, খুটি বা বঁাশের কঞ্চি পঁুতে তাতে ফিঙেসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসার জায়গা করে দিলে পাখিরা উপরিভাগের দৃশ্যমান পোকা খেয়ে ফসল সুরক্ষা করে। পরি্েবশবান্ধব এ পদ্ধতি ব্যবহারে বালাইনাশক কম ব্যবহারে ফসলের উৎপাদন খরচও কমে যায়।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পটুয়াখালীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হৃদয়েশ্বওর দত্ত বলেন “সাধারনত ধান ফসলে মাজরা, বাদামি, ঘাসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, শিষ কাটা লেদা পোকা, চুঙ্গি ও গান্ধী পোকাসহ নানা ধরনের ক্ষতিকারক পোকার আক্রমন দেখা যায়। কৃষি জমিতে পার্চিং এর মাধ্যমে ঐসকল ক্ষতিকর পোকামাকড় সহজেই দমন করা যায়। এছাড়া বালাইনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও পরিবেশ দূষণমুক্ত হয় এবং পোকার বংশবিস্তারও কম হয়। পাশাপাশি জমিতে জৈব সার হিসেবে পাখির বিষ্ঠা যোগ হওয়ায় জমির উর্বরতাও বাড়ে”।
উপজেলা কৃষি অফিসার মার্জিন আরা মুক্তা কৃষকদের উৎসাহিত করে বলেন, “বর্তমানে কৃষিজমিতে পার্চিং প্রযুক্তি ব্যবহারে ধানের ক্ষতিকর পোকা দমনসহ উৎপাদন খরচ হ্রাস এবং ধানের অধিক ফলন ও নির্মল পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে পার্চিং এর কোন বিকল্প নেই”। তিনি আরো জানান, “পার্চিং এর সুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপসহকারী কৃষি অফিসারবৃন্দ কৃষকদের মাঝে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। অত্র উপজেলার প্রতিটি ব্লকেই পার্চিং উৎসব করার কার্যক্রম চলমান থাকবে”।
এ উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষকদের মধ্যেও কম খরচে বেশি ফলন পেতে পার্চিং কৌশল গ্রহণের বিষয়ে যথেষ্ট সাড়া পাওয়া যায়।