বরিশাল ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
মো. নাসির উদ্দিন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৭ বছরের শিশু জুবায়েরের পর তার বাবা জুলহাসও মারা যান। হৃদয় বিদারক এমন মৃত্যুতে তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর গ্রামে আত্মীয়-স্বজনদের আর্তনাদ যেন থামছে না। এ খবর পেয়ে নিহত বাবা-ছেলের বাড়িতে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান।
রোববার রাতে সেখানে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে
কান্নায় ভেঙে পড়েন ইউএনও। পরিবারকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন
এবং তাৎক্ষণিক ব্যক্তিগতভাবে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ইউএনও মাশফাকুর। এসময় তিনি বলেন, ‘আমরা এই অসহায় পরিবারের পাশে আছি।’ জানা গেছে, জুলহাস ও তার ছেলে জুবায়ের শুক্রবার এশার নামাজ আদায় করতে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাম মসজিদে যান। সেখানে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাবা ও ছেলে অগ্নিদগ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু’জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইউনিটে নেয়া হলে ওইদিন রাত ১টায় ৭ বছরের শিশু জুবায়ের
মারা যায়। জোবায়েরের লাশ তার মায়ের কাছে হস্তান্তরের পর রোববার ভোরে গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছায়। লাশ দাফনের প্রস্তুতিকালে খবর আসে, তার বাবা সলেমান জুলহাসও (২৮) মারা গেছেন। ওইদিন সাড়ে ১০ টায় জুবায়েরের নামাজে জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়। আর জুলহাসের লাশ
সোমবার সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, অভাবের কারণে জুলহাস ১০ বছর আগে স্ত্রীসহ ঢাকায় পাড়ি জমান। সেখানে গার্মেন্ট শ্রমিকের কাজ করতেন জুলহাস। নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রেণিতে এবার জুবায়েরকে ভর্তি করান। ইউএনও
মাশফাকুর রহমান বলেন, বাবা-ছেলেসহ রাঙ্গাবালীর চারজন মারা গেছে। বাবা ছেলের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বাকি দুইজনের পরিবারকেও কাল (সোমবার) দেওয়া হবে। আমি জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্যার নিহতদের পরিবারকে খাস জমি দিবেন।
উল্লেখ্য, জুলহাস ও তার ছেলে জুবায়ের ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণেরঘটনায় রাঙ্গাবালীর আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী গ্রামের বেলায়েত রাঢ়ীর ছেলে গার্মেন্টস শ্রমিক জামাল রাঢ়ী (৪০) ও সদর ইউনিয়নের হাপুয়াখালী
গ্রামের সাজাহান প্যাদার ছেলে গার্মেন্টস শ্রমিক নিজাম প্যাদা (৩৫)।