বরিশাল ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
বরিশালে ১১ বছরের শিশু সন্তানকে হত্যার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় মা কনা বেগমসহ তার ২ পরকীয়া প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত। সোমবার বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শহীদ আহম্মেদ এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- নিহত শিশু রনির মা কনা বেগম ও তার ২ পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন নলি এবং শাহীন নলি। রায় ঘোষণার সময় আসামিদের মধ্যে কনা ও রুহুল আমিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্তরা সবাই বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানাধীন পশ্চিম রতনপুর এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত শাহীন কনা বেগমের আপন চাচাতো ভাই ও রুহুল আমিন শাহীনের বন্ধু এবং কাজীরহাট একতা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরচর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল নিহত রনি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে- কনার স্বামী ও মামলার বাদী লকিতুল্লাহ দুয়ারী চট্টগ্রামের চাকতাই এলাকায় দিন মজুরের কাজ করতেন। তার অবর্তমানে মেহেন্দিগঞ্জে তার স্ত্রীর কনার সঙ্গে শাহীনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর সূত্র ধরে রুহুল আমিনের সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে কনার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শাহীন ও রুহুল আমিন পশ্চিম রতনপুর এলাকায় কনার বাড়িতে যান এবং দৈহিক মিলনে লিপ্ত হন। এ সময় কনার ছেলে রনি তা দেখে ফেলে এবং তার বাবার কাছে বলে দেওয়ার কথা বললে তারা তিন জন মিলে রনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে সাপের কামড়ে রনির মৃত্যু হয়েছে বলে কনা প্রচার করেন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সন্দেহ হলে তিনি থানা পুলিশকে খবর দেন।
এ ঘটনায় নিহত রনির বাবা লতিকুল্লাহ দুয়ারী পরের দিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ রুহুল আমীনকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম মৃধা তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’