বরিশাল ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
ভোলায় গ্রামীণ ব্যাংকের যোন প্রতিনিধি অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী, ঘুষ বাণিজ্য ও সহকর্মীদের হয়রানির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ।
মঙ্গলবার ভোলা শহরের একটি পত্রিকা অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এ সকল অভিযোগ করেন গ্রামীণ ব্যাংকের ভোলা যোনে কর্মরত প্রায় ২৫-৩০ জন কর্মী। এসময় তারা অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাসের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গ্রামীণ ব্যাংক জিন্নাগড় শাখার সেকেন্ড অফিসার ও জোনের সভাপতি মো. ইমাম হোসেন।
লিখিত বক্তবে তিনি জানান, গ্রামীণ ব্যাংক ভোলা যোনের বর্তমান প্রতিনিধি অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাস এ যোনের প্রতিনিধি দায়িত্ব পায় ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে। এর কিছু দিন পরেই এক নারী সহকর্মীকে পছন্দের শাখায় বদলীর লোভ দেখিয়ে রাতে তার বাসায় যেতে বলে। এবং ওই নারী সহকর্মীকে সে কুপ্রস্তাব দেয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে অনিমেষ ও তার স্ত্রীসহ তৎকালীন যোনাল অফিসার ও অডিট অফিসারের হাতে পায়ে ধরে ওই নারী সহকর্মীর সাথে সমজোতা করেন। এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা চাঁদা তুলে। এবং পরে সেই টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও তা আজ পর্যন্ত ফেরত দেয়নি।
এর পর ভোলা যোনে অশোক কুমার দে নামের নতুন ম্যানেজার আসে। তাকে ম্যানেজ করে অনিমেষ চন্দ্র সহকর্মীদের বদলী বাণিজ্য শুরু করে। মোটা অংকের টাকা নিয়ে সহকর্মীদের এক শাখা থেকে অন্য শাখায় বদলী করেন। ওই ম্যানেজারের মেয়াদ শেষ হলে আবার নতুন ম্যানেজার আসে মলয় কুমার বিশ্বাস। তাকেও ম্যানেজ করে অনিমেষ চন্দ্র। এবং বদলী বাণিজ্য অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায়। এ যোনাল ম্যানেজার ও যোন প্রতিনিধির কারনে ভোলায় কর্মরত শাখা ব্যবস্থাপকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না।
তিনি আরো জানান, অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাস ভোলা যোনে কর্মরত ৬৭ জন সহকর্মীর কাছ থেকে গৃহ নির্মাণ লোন পাশের কথা বলে ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন। এছাড়াও সহকর্মীদের পছন্দের শাখায় বদলীর কথা বলে ২০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ নিতেন। শাখা ব্যবস্থাপকদের ভালো শাখায় বদলীর লোভ দেখিয়ে যোনাল ম্যানেজারকে ম্যানেজের কথা বলে দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিতেন অনিমেষ।
তার এ সকল দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে মুখ খুললেই তাকে খারাপ যায়গায় বদলীসহ নানা হয়রানি করেন সে।
অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাসের এসকল অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ভুক্তভোগীরা যোন সভাপতি ও সেক্রেটারির নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। সেই প্রেক্ষিতে যোন কমিটি তাকে চলতি বছরের গত ১০ সেপ্টেম্বর অনাস্থা প্রদানসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। উল্টো যারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদেরকে হয়রানি করেন অনিমেষ।
তাই দ্রুত সনয়ের মধ্যে দুর্নীতিগ্রস্থ যোন প্রতিনিধি অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাসের অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, মো. বেলায়েত হোসেন, মো. শফিক, মো. শহিদুল, ওমর ফারুক খলিফা, মো. আনিস, মো. হেমায়েত, মো. সোহেল, মো. নাজমুল, আলী আকবর, মো. রাসেল প্রমূখ।
এব্যাপারে অভিযুক্ত যোন প্রতিনিধি অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাসের মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গ্রামীণ ব্যাংক ভোলা যোনের যোনাল ম্যানেজার মলয় কুমার বিশ্বাস বলেন, অনিমেষ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ এসেছে। আমরা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেব।