বরিশাল ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
কুয়াকাটা ॥
ইলিশ প্রজনন মৌসুমে আজ (১৪ অক্টোবর ) থেকে শুরু হচ্ছে মা ইলিশ শিকারে ২২দিনের নিষেধাজ্ঞা। গভীর সমুদ্রে মাছ শিকাররত জেলেরা গতকাল (মঙ্গলবার) মধ্যরাতের আগেই তীরে ফিরেছে। মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুরসহ সমুদ্র উপকুলের বিভিন্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও নদনদীতে ট্রলার রেখে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে মৎস্য শিকারীরা। মৎস্য বিভাগের সময়পোযোগী এমন সিদ্ধান্তে বাড়ছে ইলিশের উৎপাদন। বাড়ছে মৎস্য রপ্তানীতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। তবে প্রজনন মৌসুমে অবরোধকালীণ ইলিশ জেলেদের প্রণোদনা বাড়ানোর দাবী কুয়াকাটা উপকূলীয় এলাকার জেলেদের।
মৌসুমের শুরু থেকে কুয়াকাটা উপকূলীয় এলাকার জেলেদের জালে ছিল ইলিশের আকাল। শেষ সময়ে এসে ধরা পড়ছে রূপালী ইলিশ। ঠিক এসময়েই শুরু হচ্ছে মা ইলিশের বাধাহীন প্রজননের জন্য মৎস্য শিকারের অবরোধ। জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ২২ দিনের অবরোধ চলবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত। মঙ্গলবার ( ১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২.০১ মিনিট থেকে শুরু হচ্ছে এর কার্যকারিতা। এসময়ে সারা দেশে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত করণসহ ক্রয়- বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন অমান্যকারীকে এক থেকে ২বছরের জেল অথবা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড হতে পারে। ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে মৎস্য বিভাগের এমন সিদ্ধান্তে খুশী জেলেরা। ২২ দিনের এমন কর্মহীন সময়ে জেলেদের জন্য দেয়া হচ্ছে প্রণোদনা। তবে প্রদেয় এ প্রণোদনা বাড়ানোসহ নির্ধারিত সময়েই তা প্রকৃত ইলিশ শিকারীদের মাঝে বিতরণের দাবী জেলেদের।
মাঝি সবুজ গাজী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেক ইলিশ শিকারী জেলে সহায়তা পাচ্ছেন না। যারা ছোট ছোট জাল নিয়ে নদী বা খালে মাছ শিকার করে তারা পাচ্ছেন সহায়তা।’ আলীপুরের এফবি শুকতারা ট্রলারের মাঝি কবির বলেন, ‘আমদের দেশে যখন অবরোধ দেয়া হয়, ভারতীয় এবং মায়ানমারের জেলেরা তখন মাছ শিকার করে। আলোচনা করে যদি একই সময়ে অবরোধ দেয়া হয়, তবে আমাদের জন্য ভাল হয়।’
কুয়াকাটা-অলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ করা গেলে বাড়বে মাছের উৎপাদন। যার সুফল ভোগ করবে জেলেসহ ব্যবসায়ীরা। সুফল বুঝতে পেরে কোন জেলেই এখন আর অবরোধের মধ্যে মাছ শিকার করতে যাচ্ছে না। তবে এসময়ে জেলেদের যে সহায়তা দেয়া হয় তা খুবই অপ্রতুল। জেলেদের সহায়তা বাড়ানো উচিত।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা ইমদাদুল্লাহ জানান, বিগত কয়েক বছরে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মৎস্য শিকারের নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতায় সাগরে বেড়েছে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ। অবরোধ সফল করতে জেলেদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ চলছে ধারাবাহিক গণসংযোগ। সমুদ্রসহ স্থলভাগে সক্রিয় রয়েছে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।