বরিশাল ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার পূর্ব পাড় ডাকুয়া গ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে বসত ঘর ভাংচুর লুট পাট, জমি দখল করে ঘর উত্তোলনের প্রতিবাদে এক অসহায় পরিবারের সাংবাদিক সম্মেলন।
গতকাল ০১ নভেম্বর রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে গৃহহারা মোসাঃ নারগিস বেগমের লিখিত বক্তব্য সূত্রে জানাগেছে, বিগত পাঁচ বছর আগে নারগিস বেগমের দেবর মোঃ ইউছুফ হোসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিকট থেকে গলাচিপা জে-এল নং ৪৫ মৌজা পাড়-ডাকুয়া খতিয়ান নং ৪৭২ ও ৪৯০ দাগ নং ৫২৫০ ও ৫২৪৯ এর ১৭ শতাংশ জমি লীজ নিয়ে বসত ঘর উত্তোলন করে তার (নারগিস বেগম) ও তার দেবরের পরিবার বসবাস করিয়া আসতেছিল। প্রতিপক্ষ খলিল মাল ও জিয়া মাল গং অবৈধ ভাবে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, এমন খবর টের পেয়ে ১৬ আগষ্ট গলাচিপা সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর-১৮৭/২০২০। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৯ আগষ্ট সকাল ১১টায় জহির সর্দারের নেতৃত্বে খলিল মাল ও জিয়া মালসহ ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হইয়া মারধর করে বসতঘর থেকে নার্গিস ও তার দেবর পরিবারের সাত বছরে শিশু মাহফুজ, ষষ্ঠ শ্রেনীর শিশু সুরাইয়া, নবম শ্রেনীর কিশোরী লিজাসহ সবাইকে বের করে দিয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এক ত্রাসের সৃষ্টি করে সন্ত্রাসীরা বসতঘর ভাংচুর ,লুটপাট করে নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ঐ জায়গায় একটি নতুন ঘর উঠায়। বর্তমানে নারগিস ও ইউছুফের পরিবার খোলা আকাশের নিচে অমানবিক দিন কাটাচ্ছে।
এ সন্ত্রাসীদের তান্ডব থেকে বাঁচতে নারগিসের স্বামী জাফর মাল প্রথমে উলানিয়া পুলিশ ক্যাম্পে যায়। সেখানে ওই সময় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তার কাছে সহায়তা চাইলে তিনি তাদেরকে গলাচিপা থানায় যেতে বলেন। গলাচিপা থানায় গেলে ওসি মনিরুল ইসলাম তাদেরকে আবার উলানিয়া পুলিশ ক্যাম্পে যেতে বলেন, ফের উলানিয়া পুলিশ ক্যাম্পে গেলে দায়িত্বরত কর্মকর্তা দুইজন পুলিশসহ ঘটনাস্থানে যায়। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা মালামাল লুট করে নিয়ে নতুন ঘর তোলার কাজ করলেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নিয়ে চলে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে নার্গিস বলেছেন এস,আই মিজানুর রহমান, ওসি মনিরুল ইসলাম ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের আস্কারায় প্রকাশ্য ও দিবালোকে সন্ত্রাসীরা আমাদের বসতঘর দখল করে আমার স্বামী ও তিন সন্তানসহ রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে মধ্যযোগিও বর্বরতকেও হার মানিয়েছে।
ঘটনার পূর্বে এস,আই মিজানের মাধ্যমে একাধিকবার থানায় ডেকে নিয়ে আর্ধেক জমি খলিল মালককে ছেড়ে দিতে বলেন। এ প্রস্তাবে নার্গিসের স্বামী জাফর মাল রাজী না হওয়ায় ওসি মনির ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন-উপজেলা চেয়াম্যান ও ওসি যদি তোমার পক্ষে না থাকে তা হলে তোমরা কি জমি রক্ষা করতে পারবা ?
এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় গলাচিপা থানায় মামলা না নেয়ায় নারগিস বেগম পটুয়াখালী দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং(২৯/২০২০,যার জি-আর(২৭৭/২০২০)। এ মামলা করায় প্রতিপক্ষরা রুমা বেগমকে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং(এম.পি নং ৪৭/২০২০) যাহার জি-আর নং (৩০৪/২০২০)।
উল্লেক্ষ্য, নারগিস বেগম কর্তৃক দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে দায়েরকৃত মামলাটি গলাচিপা থানা বিগত ০৬.০৯.২০২০ইং তারিখ এফ-আই-আর করে এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেন এস,আই মিজানুর রহমানকে। এসআই মিজানুর রহমান সন্ত্রাসীদের পক।ষ অবলম্বন করায় নারগিস বেগম তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য ওসি সাহেবকে অনুরোধ করলেও ওসি অনুরোধ রক্ষা না করায়, ০৮.০৯.২০২০ইং তারিখ পুলিশ সুপার পটুয়াখালী মহোদয়ের সাথে দেখা করে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করলে,তিনি তাদেরকে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের আশ্বস্ত করেছিলেন কিন্তু অদ্যাবদী তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করেন নাই। এস,আই মিজানুর রহমান আসামীদের পক্ষ নিয়ে নারগিসের শিশু সন্তানসহ পরিবারের সকল সদস্য বসতঘর থেকে নামিয়ে তালা দেয়। আসামীরা বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায় এবং একের পর এক হুমকি দিচ্ছে বলেও গৃহহারা নারগিস বেগম সাংবাদিকদের জানান।
সংবাদ সম্মেলনে গৃহহারা নারগিস বেগম এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানকরতঃ তাদের বসত ঘর জায়গাসহ ফেরৎ পাইতে পারি তার জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।