বরিশাল ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
বরিশাল নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাফিন মাহমুদ তারিক খানসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে পুকুরের মাছ লুটে নেয়া এবং চাঁদার দাবীতে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কউন্সিলর শরীফ মো: আনিছুর রহমান বাদী হয়ে সোমবার বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং এমপি ৩০৬/২০২০। আদালত মামলাটি গ্রহন করে ওসি কোতয়ালীকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামীরা হলো সাফিন মাহমুদ তারিক খান,শাওন হাওলাদার,সাগর হাওলাদার, রুবেল খান, হাসান হাওলাদার, মিজান ফরাজী, আউয়াল খান, শাহান শিকদার, নজরুল হাওলাদার, মন্টু দাস, হাসান হাওলাদার, রানা, জামাল,পারভেজ, জাফর। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ৫/৭জন আসামী রয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী বরিশাল আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি ও ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর। বাদী তফসিল সম্পত্তি ডিক্রি মূলে ও বিএস রেকর্ড মূলে মালিক এবং ভোগ দখল করে আসছেন। তফসিল সম্পত্তি লালা দীঘিতে রুই কাতলা মৃগেল,কালী বাউস, তেলাপিয়া ও কার্প জাতীয় বিভিন্ন প্রকার মাছ চাষ করছেন। দিঘীর মাছ বড় হওয়ায় আসামীদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। দিঘীতে আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ রয়েছে। আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যও অপ্রকাশ্যভাবে প্রচার করে আসছিল যে দিঘীর মাছ জোরপূর্বক লুটে নিবে। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করেন বাদী।
এরপর আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রোশপোষন করে গত ৭ই নভেম্বর নামধারী আসামীরা এবং অজ্ঞাত বেশ কয়েক জন সন্ত্রাস প্রকৃতির লোকসহ দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রসহ মাছ ধরার জালের নিয়ে দিঘীতে অনাধিকার প্রবেশ করে। এসময় আনুমানিক ৩ লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ধরে। বাদী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাছ ধরতে বাধা প্রদান করেন। আসামীরা তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে বাদীর সাথে আসা স্বাক্ষীদের পিটিয়ে জখম করে। এবং তফসিল ভূক্ত লালা দিঘীতে আসতে নিষেধ করে।
আসামীরা প্রকাশ করে দিঘীতে মাছ চাষ করতে হলে তাদেরকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। আসামীরা বাদী ও স্বাক্ষীগনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মাছ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। বাদী বিষয়টি গণ্যমান ব্যক্তিবর্গকে জানিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে।
মিমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় মামলা করতে বিলম্ব ঘটে। বাদীসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মামলার ১ নং আসামী শাফিন মাহমুদ তারিক খান সন্ত্রাসী, মাদক কারবারীর সাথে জড়িত। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছে। এ পর্যন্ত ৬টি বিয়ে করেছেন তিনি। সম্প্রতি লালা দিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা ডাব বিক্রেতা দুলালের মেয়ে ঝর্না আক্তারকে বিয়ে করে। তাকে নিয়ে ফিশারী রোডের একটি ভাড়া বাসায় থাকে। তবুও তিনি আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড সেটে মস্তবড় নেতা। তারিকের সহযোগি নজরুল ও মনির কিছুদিন পূর্বে রুপাতলী সোনারগাও টেক্সটাইলের সামনে থেকে র্যবের হাতে ইয়াবা সহ আটক হয়।
এলাকায় কেউ নতুন কোন বাড়ি করতে গেলে তারিককে দিতে হয় চাঁদা। অপরদিকে মামলার ১৫ নং আসামী আবু জাফর বরিশাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পিয়ন হওয়ার সুবাধে জেলা প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে বিভিন্নস্থান থেকে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই আবু জাফর আওয়ামী লীগ নেতা তারিকের ঘনিষ্ঠ সহযোগি হিসেবে পরিচিত। মামলার ৮ নং আসামী শাহান শিকদার ইতিপূর্বে ২৫ নং ওয়ার্ডের বটতলা এলাকা থেকে ডিসের তার চুরির সময় র্যাব তাকে হাতেনাতে ধরে। এলাকায় নানা অপকর্মের হোতা শাফিন মাহমুদ তারিকসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের লাগাম টেনে ধরতে পুলিশ কমিশনারের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন ।