বরিশাল ১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অব্যাহত বিধিনিষেধের কারণে কাজ হারিয়েছেন অনেক শ্রমজীবী। আবার অনেকের স্বাভাবিক রোজগারে টান পড়ায় পরিবার নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। এসব ব্যক্তি উপায় না পেয়ে সহায়তা চেয়ে কল করেছেন সরকারি তথ্য ও সেবার ফোন নম্বর ৩৩৩-তে। পরিবারের দুর্দশার কথা জানিয়ে তাঁরা সহায়তা চান।
বরিশালে এমন ৩০০ ব্যক্তির মধ্যে আজ শনিবার চাল, ডালসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তুলে দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আজ দুপুর ১২টায় নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানসংলগ্ন অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে এসব সামগ্রী তুলে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশান্ত কুমার দাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরিশাল গৌতম বাড়ৈ, এনডিসি মো. নাজমূল হুদা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার রায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
সহায়তাসামগ্রীর মধ্যে ছিল ২০ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, আলু ২ কেজি, তেল ১ লিটার, চিনি ১ কেজি, লবণ ১ কেজি ও একটি সাবান। সহায়তা পাওয়া এক ব্যক্তি বললেন, তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক। আগে প্রতিদিন মালিকের ভাড়া মিটিয়ে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করতেন। ১ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হওয়ার পর থেকে আয়-রোজগার একেবারেই বন্ধ। ধারদেনা করে আর চলতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত ওই নম্বরে কল করে সহায়তা চেয়েছেন।
নগরের ৬ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুই নারী সহায়তার জন্য ৩৩৩ নম্বরে কল করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী দিনমজুর। আর তিনি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে কোনোমতে সংসার চালাতেন। লকডাউন শুরুর পর দুজনের আয় বন্ধ। এরপর ধারদেনায় এক বেলার খোরাক দিয়ে তিন বেলা চালিয়ে নিয়েছেন। তাই একজনের পরামর্শে সরকারি নম্বরে কল করে সহায়তা চান। ওই নারী বলেন, ‘আইজ চাউল, ডাইল পাইয়্যা খুব উপকার অইছে।’
সহায়তাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার করে চলাফেরা করবেন, পাশাপাশি সবাই করোনা প্রতিরোধী টিকা নেবেন। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই বরিশালে কাজ হারানো মানুষেরা প্রশাসনের ৩৩৩ নম্বরে সহায়তা চেয়ে ফোন করছেন। আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের বাড়িতে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হতো। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর এই ফোনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে পর্যায়ক্রমে একসঙ্গে অনেককে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।