বরিশাল ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
কাতার বিশ্বকাপে বেশি কথা হচ্ছে মরক্কো নিয়ে। স্পেনকে বিদায় করেছে তারা। শুধু তাই নয়, আশরাফ হাকিমি আর হাকিম জিয়েস উড়ন্ত বর্শার মতো ফুটবল খেলছেন। আজ আল থুমামা স্টেডিয়ামে পর্তুগালের বিপক্ষে খেলতে নামবেন। জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ফিলিপ লাম কিছুতেই কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগাল-মরক্কো লড়াইকে আফ্রিকা-ইউরোপের লড়াই বলতে রাজি নন। বলবেনই বা কেন? স্পেনের আন্দালুসিয়া থেকে তাকালে মরক্কো উপকূল দেখা যায়। শুধু তাই নয়, বর্তমান দলের সেরা দুই তারকাও ইউরোপের তৈরি। হাকিমির জন্ম মাদ্রিদে। খেলা শিখেছেন রিয়াল মাদ্রিদের যুবদলে। এখন খেলেন পিএসজিতে। অন্যদিকে, জিয়েস এখন চেলসিতে খেললেও জন্ম নেদারল্যান্ডসে। খেলা শিখেছেন আয়াক্সে। সবচেয়ে বড় কথা মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগ্রাগুই নিজেই স্বীকার করেছেন, ‘ইউরোপের খেলার স্টাইল অনুসরণ করার চেষ্টা করি আমরা।
তবে সেটার মধ্যে মরোক্কান মূল্যবোধের একটা ছাপ থাকে।’ সম্ভবত এ কারণেই লাম বলেছেন, ‘টার্মস অব ফুটবল কালচার মরক্কো ইজ ইউরোপিয়ান।’ তাই কোয়ার্টার ফাইনালে আজ ইউরোপিয়ান স্টাইলের ফুটবলই দেখা যাবে। শেষ ম্যাচে সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে পর্তুগাল নিজেদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে। কিন্তু বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দুইবার মুখোমুখি হয়েছে পর্তুগাল ও মরক্কো। ১৯৮৬ আসরের গ্রুপ পর্বে পর্তুগিজদের ৩-১ গোলে হারায় আফ্রিকার দলটি। ৪ বছর আগে রাশিয়া আসরে দেখা হয় দুই দলের। ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর একমাত্র গোলে ম্যাচটি জেতে পর্তুগাল। আজ প্রথম একাদশে রোনালদোকে দেখা যাবে কিনা নিশ্চিত নয়। এই ইস্যু নিয়ে পর্তুগাল দলে রিতিমতো গৃহদাহ চলছে। ফার্নান্দো স্যান্তোস যখন এমন সমস্যা জর্জরিত, তখন নকআউট পর্বে তোলা প্রথম আরব কোচ ওয়ালিদ বাহবা পাচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বরে মরক্কোর দায়িত্ব নেন তিনি। তার কোচিংয়ে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে অপরাজিত আফ্রিকার দলটি। এখন পর্যন্ত কেবল একটি গোল হজম করেছে তারা। সেটা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডে কানাডার বিপক্ষে।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে রোনালদোর পরিবর্তে প্রথম একাদশে খেলানো হয়েছিল গনসালো রামোসকে। কাতার বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন পর্তুগালের ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে হারানোর ম্যাচে কীর্তি গড়েন তিনি। ২০০২ সালে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসার পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথমবার শুরুর একাদশে নেমে হ্যাটট্রিক করেন এবং দলের চেহারাও পাল্টে দিয়েছেন। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে অনায়াসে একটি গোল করেন পেপে। ৩৯ বছর ও ২৮৩ দিন বয়সে গোলটি করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান পর্তুগালের এই ডিফেন্ডার। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ডটি এখন তার। এই দুটি নজির পর্তুগাল দলে অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের মিশেলের ফল। কিন্তু ৩৭ বছরের রোনালদোকে নিয়ে অশ্বস্তির কাঁটাও আছে। আজ মহাতারকার চেয়ে সাধারণ টিম ম্যান হয়ে তিনি কি পর্তুগালকে সেমিফাইনালে তুলতে পারবেন?