বরিশাল ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
দি বরিশাল ডেস্ক।। আর্জেন্টিনার হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ প্রায় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত ফুটবল খেলে করলেন হ্যাটট্রিক। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্টের পর দ্বিতীয়বার কোনো ফুটবলার ফাইনালে এ কীর্তি গড়লেন। তার পরও তিনি ট্র্যাজিক নায়ক, হেরেই মাঠ ছাড়তে হলো। তবে নায়কের মর্যাদা পেয়েছেন। কাতার বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে নিজের দখলে নিয়েছেন গোল্ডেন বুট। অবশ্য চোখের জলে বিদায় নেয়ার আগে বুঝিয়ে দিলেন, আগামী দিনে বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চে একাই দাপিয়ে বেড়াবেন ফরাসি এ স্ট্রাইকার।
এমবাপ্পের প্রধান অস্ত্র প্রান্ত ধরে দৌড়। কিন্তু ফাইনালের প্রথমার্ধে তাকে এক প্রকার আটকে রেখেছিল আর্জেন্টিনা। দৌড়ানোর কোনো সুযোগ না দেয়ার জন্য মলিনা ও ম্যাক অ্যালিস্টারকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছিলেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। তাই বারবারই আটকে যাচ্ছিলেন এমবাপ্পে। ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম মাঠ থেকে তুলে নেন অলিভিয়ের জিরুকে। তখন প্রধান স্ট্রাইকারের ভূমিকায় চলে যান এমবাপ্পে। এরপর আরো বেশি নিষ্প্রভ হয়ে পড়েন। প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার ডি-বক্সে ঢুকতে পেরেছিলেন মাত্র একবার।
খেলার যখন ৭৯ মিনিট, পেনাল্টি থেকে গোল পায় ফ্রান্স। গোল করলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ম্যাচে নিজেদের খুঁজে পায় ফ্রান্স। স্কোরলাইন তখন দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা ২, ফ্রান্স ১। অল্প সময়ের ব্যবধানেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ২৩ বছরের ফরাসি স্ট্রাইকার। চমত্কার গোল করে দলকে সমতায় ফেরান। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ গড়ালে ১১৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আরো একটি গোল করেন এমবাপ্পে। ৫৬ বছর পর এ প্রথম কোনো বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক। সবশেষে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথমেই এমবাপ্পের পেনাল্টি শট। এবারো বল জড়ালেন জালে। যদিও শেষ পর্যন্ত ৪-২-এ হেরে বিশ্বকাপ তুলে দিতে হয় লিওনেল মেসিদের হাতে।
মেসির সঙ্গে যৌথভাবে ৫ গোল নিয়ে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নেমেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফাইনালে হ্যাটট্রিক করে পুরো টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে জেতেন বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট। অন্যদিকে ফাইনালে দুই গোল করে এক গোলের জন্য গোল্ডেন বুট মিস করেন মেসি।
বিশ্বকাপে আরো একটি দারুণ রেকর্ড গড়লেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ গোলের দাবিদার এখন তিনিই। ফাইনালে এখন পর্যন্ত তার গোল সংখ্যা ৪টি। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে তিনটি ও রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে করেছিলেন একটি। বিশ্বকাপ ফাইনালে তার নিচে রয়েছেন পেলে, জিওফ হার্স্ট, ভাভা ও জিদান। তাদের ঝুলিতে রয়েছে ৩টি করে গোল। এছাড়া এমবাপ্পের আগে একাধিক বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল আছে কেবল ব্রাজিলের ভাভা ও পেলের, জার্মানির পল ব্রেইটনারের এবং ফ্রান্সের জিনেদিন জিদানের। এর মধ্যে ভাভা গোল করেন ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে। পেলে ১৯৫৮ ও ১৯৭০ সালের ফাইনালে গোল করেন। পল ব্রেইটনার গোল করেন ১৯৭৪ ও ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে। জিদান গোল করেন ১৯৯৮ ও ২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দুই অংকের কোটায় গোল করেছেন মোট ১৫ জন ফুটবলার। এর মধ্যে এমবাপ্পের গোল ১২টি। ২৩ বছর ৩৬৩ দিন বয়সের এ ফুটবলার সেই ১৫ জনের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী। তার আগে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে সেই রেকর্ড গড়েছিলেন জার্মানির জার্ড মুলার (২৪ বছর ২২৬ দিন)।