বরিশাল ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
দি বরিশাল ডেস্ক।। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে মেঘনা নদী এলাকায় ডাকাত সদস্যদের প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে মদদ দেওয়ায় বরিশালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বরিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন খান।
বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন- উপজেলার দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাম দেওয়ান, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদ দেওয়ান, ইউনিয়ন যুবলীগ আহবায়ক মোশারেফ আকন, দলীয় কর্মী বাচ্চু ও কাশেম দেওয়ান।
কামাল উদ্দিন খান বলেন, সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় ওই পাঁচজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ৭ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হয় ডাকাত সর্দার নাঈম দেওয়ান।
মেহেন্দীগঞ্জের দড়ির চর খাজুরিয়া ইউনিয়নের চুন্নু দেওয়ানের ছেলে নাঈমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতির ১৪টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সহযোগী হিসাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওই পাঁচ নেতার নাম বলেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নাম উল্লেখ করে তাদের নিয়মিত ডাকাতির ভাগ দেওয়ার পাশাপাশি মাসিক ভিত্তিতে টাকা দিতে হয় বলে তথ্য দেয় নাঈম।
পাঁচজনের মধ্যে দড়িরচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাম দেওয়ান ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য শহিদ দেওয়ান ও কর্মী বাচ্চু ও কাশেম দেওয়ান স্থানীয় রাজনীতিতে সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের অনুসারী। ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোশাররফ আকন সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ বিরোধী শিবিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাম দেওয়ান বলেন, আমি স্থানীয় রাজনীতিতে এমপির পঙ্কজ দেবনাথের পক্ষের লোক হওয়ায় বিরোধী পক্ষ থেকে এসব মিথ্যা অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলামের সঙ্গে আমার বিরোধ রয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে একবার সাক্ষী দিয়েছিলাম। তার প্রতিশোধ হিসাবে গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
অপর অভিযুক্ত শহীদ দেওয়ান বলেন, এটা সবার জানা যে এখানে আওয়ামী লীগে দুই গ্রুপ। স্থানীয় এমপি পঙ্কজ দেবনাথ গ্রুপ ও তার বিরোধী গ্রুপ অপরটি। আমি এমপি গ্রুপের বলে ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি। তাছাড়া ওসিও আমাদের বিরোধী হয়ে কাজ করেন। এই উপজেলায় আমি বহু চোর-ডাকাত ধরে থানায় দিয়েছি। আজ আমাকে বলা হচ্ছে ডাকাতের সহযোগী। সবই মিথ্যা বানোয়াট।
মোশাররফ আকন বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া এই নাঈম দেওয়ান কে? শহীদ দেওয়ানের আপন ভাতিজা। আমার বংশের সবার ব্যাপারে খোঁজ নিন। দেখুন আমার আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কেউ কোনো অপকর্মের সঙ্গে আছেন কিনা। এই শহীদ দেওয়ানের পরিবারে এমন অনেকে আছে যারা ডাকাতিসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে। আমি বহু চোর-ডাকাত ধরে পুলিশে দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে এমপি গ্রুপের ষড়যন্ত্র করছে।
সূত্র: কালেরকন্ঠ