বরিশাল ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে ॥ এক মন্তব্যে কেঁপে উঠল পুরো বরিশাল। নৌকাকে হারাতে হাতাপাখার প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিমকে তিন কেটি টাকা উৎকোটি দিয়েছে বর্তমান মেয়র, হাসানাত তনয় সাদিক আব্দুল্লাহ। অভিযোগটি করেছেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী, বর্তমান কাউন্সিলর শরীফ আনিচুর রহমান। তাও কথায় কথায় নয়, খোদ সংবাদ সম্মেলন ডেকে তিনি এই অভিযোগ করেছেন। রোববার বিকেলে তার নির্বাচনি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি ।
২০১৮ সালের বিসিসি নির্বাচন থেকেই আলোচনায় ছিলেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ আনিচুর রহমান। নির্বাচনের পরপরই যে ১০ কাউন্সিলর সাদিকের বিপক্ষে অবস্থান নেন তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন। নগরীতে গুঞ্জন রয়েছে, আনিচুরকে একবার রেগে মেয়র চড় মেরেছিলেন। তবে গত ৫টি বছর তিনি যেভাবে পেরেছেন কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় মেয়রের বিরুদ্ধাচারণ করে গেছেন। মহানগর আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য হলেও তিনি ছিলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী।
সেই আনিচ রোববার সংবাদ সম্মেলন করে বোমা ফাটালেন। তার নির্বাচনী এলাকায় সাদিক পন্থি প্রার্থীর বিরুদ্ধে হামলা ভয়ভীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি বলেন নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়বাতকে পরাজিত করতে হাতপাখার প্রার্থীকে তিন কোটি টাকা উৎকোচ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন নৌকার মনোনয়ন থেকে বাদ পড়ায় সাদিক আবদুল্লাহ ও তার পিতা হাসানাত আবদুল্লাহ ঢাকায় ডেকে নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখার প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে তিন কোটি টাকা দিয়েছেন। যাতে শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত পরাজিত হন।
আর খোকন সেরনিয়াবাত পরাজিত হলে সাদিক আবদুল্লাহ পুনরায় বরিশালে সব অপকর্ম নির্বিঘ্নে করতে পারবে বলে চিন্তা করছে। সাদিক আবদুল্লাহর আমলে নির্যাতিত ১০ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে তিনজন করে প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছে। যাদের ইতোমধ্যে ৩০ লাখ টাকা দেওয়াও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আনিস।
মুহুর্তে পুরো বরিশালে টক অব দ্য টাউনে পরিনত হয় তার অভিযোগটি। মধ্যরাতে মহানগর আওয়ামীলীগের জরুরী সভায় শরীফ আনিচুর রহমানকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। রাত ১টার দিকে পত্রিকা অফিসগুলোতে দপ্তর সম্পাদক হেমায়েতউদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তার বহিস্কারের তথ্যটি জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তার মিথ্যাচার এবং সংহঠন বিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
হাতপাখা মার্কার প্রার্থীকে তিন কোটি টাকা উৎকোচ দেয়ার বক্তব্যে তোলপাড় চলছে। হাতপাথার সমর্থকদের মধ্যেও এ নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। এ বক্তব্য সম্পূর্ন মিথ্যেচার বলে তাদের দাবি। মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, এটি ষড়যন্ত্রের ফাঁদ হতে পারে। এ ফাঁদে আমরা পা দেব না।’
বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীফ মো. আনিছুর রহমান মিডিয়াকে বলেন, ‘আমি সত্য বলায় আমাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আমরা যে ১০ জন কাউন্সিলর মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষ ত্যাগ করেছিলাম, সেই ১০টি ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হয়েছে আমাদের জব্দ করার জন্য। সত্য প্রকাশ করাতেই আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিস্কারে তার কিছুই আসে যায় না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।’