বরিশাল ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
স্টাফ রিপোর্টার / বরিশালে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ১০ টাকা মূল্যের ও এম এস এর কার্ড নিয়ে। প্রথমে এ কার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে বিতরনের কথা থাকলেও পরে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। অভিযোগ উঠেছে নগরীর একাধিক ওয়ার্ডে শুধুমাত্র যারা সরকারী দল করে তাদের কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। আর এ কারনে আজ জেলা প্রশাসকের কাছে নগরীর ৩৫টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত প্লাটফর্ম ‘করোনা প্রতিরোধে বরিশাল: সমন্বিত উদ্যোগ’ এ অভিযোগ তুলে তা তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এ দাবিতে তারা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
একাধিক সুত্র জানিয়েছে মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ও এম এস এর কার্ড বিতরণ নিয়ে ক্ষুদ্ধ একাধিক কাউন্সিলর। প্রথমে এ কার্ড তাদের মাধ্যমে করার নির্দেশনা ছিল। একজন কাউন্সিলর জানান, হঠাৎ করেই প্রশাসন ওএম এস এর কার্ড স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি/ সম্পাদকের উপর ন্যাস্ত করেন। তবে চুড়ান্ত তালিকায় কাউন্সিলররা স্বাক্ষর দেবেন। এতে একাধিক ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের মতামত অগ্রাহ্য করে কার্ড করার অভিযোগ উঠেছে। এখানে হত দরিদ্রদের বাদ দিয়ে শুধু মাত্র দলীয় কমীদের মাঝে কার্ড বিতরণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন কাউন্সিলর ঐ তালিকায় স্বাক্ষর করতে অস্বিকার করেন বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে ১০টাকার ওএম এস চাল নিয়ে সরকার যে স্বচ্ছতা আনতে গিয়ে কার্ড প্রনায়ন করেছে তা শুরুতেই বিতর্কের জন্ম দিল। এর জন্যই ক্ষুদ্ধ হয়ে মাঠে নামে ৩৫ সংগঠনের জোট করোনা প্রতিরোধ/ বরিশাল সমন্বিত জোট।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন- ‘নগরীতে সদ্য বিতরণ হওয়া ১০ টাকা কেজি দরের চালের রেশন কার্ড বিতরণে দলীয়করণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে রেশন কার্ড বিতরণ করা হয়। কিন্তু রেশন কার্ড হতদরিদ্রদের বিতরণ না করে দলীয় বিবেচনায় প্রদান করা হয়। নগরীর চাঁদমারি, রুপাতলী, ভাটিখানা, পলাশপুর, নাজিরমহল্লা এলাকায় এধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেহেতু সরকারিভাবে বিতরণ করা হচ্ছে, সেহেতু হতদরিদ্রদেরই এ রেশন কার্ড পাওয়া উচিত।’ এ অবস্থায় বিষয়টির তদন্তের দাবি করে হতদরিদ্র মানুষদের নিয়ে তালিকা করে দল-মত নির্বিশেষে পর্যাপ্ত পরিমাণে রেশন কার্ড বরাদ্দ করার দাবি জানানো হয় প্লাটফর্মের পক্ষ থেকে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট রিয়াজ, সাংবাদিক সাইফুর রহমান মিরন, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এলবার্ট রিপন বল্লভ প্রমুখ।
এ ব্যপারে ‘করোনা প্রতিরোধে বরিশাল: সমন্বিত উদ্যোগ’ এর সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বরিশাল শাখার সদস্য সচিব ডা: মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা এ ধরনের দলীয়করন করেছেন নগরীতে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে এধরনের অভিযোগ এসেছে। যে কারণে মঙ্গলবার বিষয়টি তদন্তের জন্য বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।