বরিশাল ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
পটুয়াখালী প্রতিনিধি ঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জলোচ্ছাসের ফলে পটুয়াখালীর নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাম, ফেলন, বিভিন্ন শাক-সব্জী, মরিচের ক্ষেত ও আউশের বিজতলা। বিভিন্ন এলাকায় অনেক কাঁচা ঘরবাড়িসহ গাছ পালা এবং বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙ্গে পড়েছে। বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ
বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পানির চাপে রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া লঞ্চঘাটের পল্টুন ডুবে গেছে।
উপজেলার চরলতা মৌডুবী চর আন্ডা কাউখালী ও চর কাশেমের বিভিন্ন পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ থেকে পানি প্রবেশ করে আবারও প্লাবিত হয়েছে প্রায় দশটি গ্রামের ৭৫০ টি ঘর বাড়ি ও বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। এছাড়া কলাপাড়া উপজেলার লালুয়াতে ৭ কিলোমিটার অংশে বেড়িবাাঁধ না থাকায় সেখানে প্রায় ৫০০ ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এসব দুর্গত মানুষদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদেরকে বাড়িতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এদিকে ঝড়ের কারনে সাইক্লোন শ্লোটারে যাওয়ার সময় গাছের ডাল ভেঙ্গে বুধবার এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং সচেতনতামূলক প্রচারনা চালাতে গিয়ে নৌকা ডুবির ঘটনায় এক সিসিপি কর্মী শাহ আলম নিহত হয়েছেন। এদিকে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে কাজ করছে প্রশাসন ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে এ পর্যন্ত জেলায় ৮১২১ টি ঘড়-বাড়ি আংশিক এবং ২৩৫৫ টি ঘর-বাড়ি সম্পুর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলায় ৪৫৫৩ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত। ঘূর্ণিঝড়টি উপকুল অতিক্রম করার সময় নদীতে পানির উচ্চতা ছিল বিপদ সীমার পৌনে ছয় ফুট উপরে। এর ফলে জেলায় প্রায় ১৭০ মিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ন বিদ্ধস্ত হয়েছে এবং প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
জেলায় মোট ৫৭৫৪ টি পুকুর এবং ৬২৩টি ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৮ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। জেলার ৪০ ভাগ ম্যানগ্রেভ বাগান এবং অন্যান্য ১০ ভাগ
গাছপালার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বিভগীয় বন কর্মকর্তা।