বরিশাল ৩১শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকার লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ট্রাকচাপায় মা, বাবা ও বোন হারানো সেই নবজাতক। তাকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন হাসপাতালে ভর্তি থাকা প্রসূতি মায়েরা।
রোববার (১৭ জুলাই) লাবীব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নবজাতকের পাশের বেডে ভর্তি থাকা এক প্রসূতি মা ওই নবজাতককে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন। এতে বাচ্চাটির বুকের দুধের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আশা করছি সে দ্রুতই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।
হাসপাতালের নার্স সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন, শনিবার রাতে এক প্রসূতি তার বুকের দুধ দিয়েছিলেন। আজ তার ছুটি হয়ে গেছে। পরে নাছিমা বেগম নামে আরেক প্রসূতি তিন বার দুধ দিয়েছেন। আজ তারও ছুটি হয়ে যাবে। তবে হাসপাতালে আরও প্রসূতি আছেন। তারা স্বেচ্ছায় ওই শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য রাজি আছেন।
এর আগে শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। প্রসবের নির্ধারিত সময় অতিক্রম হওয়ায় আলট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন তারা। সেখান থেকে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই ওই তিনজন নিহত হন। তবে ওই সময় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। জন্ম নিয়ে রাস্তায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে নেওয়ার পরই জানা যায় জীবিত আছে নবজাতক কন্যাটি।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকটিকে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে এক্সরে করে শিশুটির ডান হাতের দুইটি হাড় ভেঙে গেছে বলে জানা যায়। বর্তমানে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে নগরীর লাবীব হাসপাতালে সদ্যজাত শিশুটি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এই নবজাতক ছাড়াও নিহত জাহাঙ্গীর-রত্না দম্পতির এক ছেলে আর এক মেয়ে রয়েছে। মেয়ে জান্নাত (১০) চতুর্থ শ্রেণিতে পড়লেও ছেলে এবাদত (৭) স্কুলে যায় না।